মিয়ানমারে বিক্ষোভ, গুলিতে নিহত ১৮

মিয়ানমারে সামরিক জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে অন্তত ১৮ জন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

দেশটির একজন রাজনীতিক এবং একজন চিকিৎসকের বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

রয়টার্স বলছে, দেশজুড়ে বিক্ষোভকারীদের ওপর টানা দ্বিতীয় দিনের মতো পুলিশের ব্যাপক দমন-পীড়নে অন্তত ১৮ জন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন।

রবিবার সকালের দিকে মিয়ানমারের বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনে শিক্ষকদের বিক্ষোভে স্টান গ্রেনেড ছুড়েছে পুলিশ। এই বিক্ষোভে অংশ নেয়া একজন নারী নিহত হয়েছেন।

ইয়াঙ্গুনের বিভিন্ন প্রান্তে স্টান গ্রেনেড ও টিয়ার গ্যাস ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়ার চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর গুলিবষর্ণ করেছে পুলিশ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সেখানকার একজন চিকিৎসক রয়টার্সকে বলেছেন, বুকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় নিয়ে আসার পর হাসপাতালে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।

স্থানীয় রাজনীতিক কিয়াও মিন টিকে রয়টার্সকে বলেছেন, দক্ষিণাঞ্চলীয় দাওয়েই শহরেও গুলিবর্ষণ করেছে পুলিশ। এতে তিনজন নিহত ও আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

থাইল্যান্ডভিত্তিক মিয়ানমারের নির্বাসিত নাগরিকদের পরিচালিত অনলাইন সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতি বলছে, মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ে একজন নিহত হয়েছেন। এই শহরেও বিক্ষোভকারীদের ওপর ব্যাপক চড়াও হয়েছে পুলিশ। তবে স্থানীয় একটি দাতব্য সংস্থা বাগো শহরে দু’জনের প্রাণহানির তথ্য দিয়েছে।

স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, দেশটির উত্তরপূর্বাঞ্চলের লাশিও এবং দক্ষিণের মায়েক শহরেও চড়াও হয়েছে পুলিশ। মিয়ানমারের জান্তা প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং বলেছেন, কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভ দমনে সর্বনিম্ন বলপ্রয়োগ করছে। কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহের বিক্ষোভে পুলিশি সহিংসতায় দেশটিতে তিন বিক্ষোভকারীর প্রাণহানি ঘটে।

দেশটিতে গত ১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর থেকে এখন পর্যন্ত মোট ২১ জনের প্রাণহানি ঘটল। সহিংসতায় পুলিশের এক সদস্যও নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে সেনাবাহিনী।

গত ১ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার হটিয়ে ক্ষমতাগ্রহণের পর থেকে অস্থিতিশীল রয়েছে মিয়ানমার। অভ্যুত্থানের পর দেশটির নেত্রী অং সান সু চি ও তার দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) নেতাকর্মীদের আটক করে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী।

গত ৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জালিয়াতির মাধ্যমে এনএলডি জয়ী হয়েছে বলে অভিযোগ করে অভ্যুত্থানের পক্ষে সাফাই জান্তা সরকার। প্রায় ৫০ বছরের সেনাশাসনের পর দেশটিতে গণতন্ত্রের যাত্রার কয়েক বছর যেতে না যেতেই আবারও সামরিক জান্তা ক্ষমতায় ফিরে আসায় লাখ লাখ মানুষ প্রতিদিনই বিক্ষোভ করছেন।

মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের নিন্দা জানানোর পাশাপাশি দেশটির নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে পশ্চিমা বিশ্ব। পশ্চিমের কয়েকটি দেশ ইতোমধ্যে মিয়ানমারের সেনা জেনারেলদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //