নাগোর্নো-কারাবাখ: এবার রাশিয়ার মধ্যস্থতায় শান্তি চুক্তি

নাগোর্নো-কারাবাখের বিরোধপূর্ণ এলাকা নিয়ে সামরিক সংঘাত অবসানে শান্তি চুক্তি করেছে আর্মেনিয়া, আজারবাইজান ও রাশিয়া।

আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে প্রায় ছয় সপ্তাহ লড়াইয়ের পর গতকাল সোমবার (৯ নভেম্বর) এ চুক্তি হলো। আজ মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) থেকেই কার্যকর হয়েছে শান্তি চুক্তিটি।

তবে আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান এ চুক্তিকে তার ও দেশের জনগণের জন্য ‘খুবই বেদনাদায়ক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। 

তিনি বলেন, তবে যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য এ চুক্তি মেনে নেয়া ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না।

অঞ্চলটি আন্তর্জাতিকভাবে আজারবাইজানের বলে স্বীকৃত, কিন্তু ১৯৯৪ সাল থেকে আর্মেনিয়ার নৃগোষ্ঠীগুলো দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। সে বছর একটি যুদ্ধবিরতি হলেও কোনো চুক্তি ছিলো না।

চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে লড়াই শুরুর পর থেকে অনেকবার অস্ত্রবিরতি হলেও সেগুলো সব ব্যর্থই হয়েছে। রাশিয়ার হস্তক্ষেপে ফের চুক্তিপত্রে সই করেছে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান এবং যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দুইপক্ষই। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চুক্তিতে ‘জয়’ হয়েছে আজারবাইজানের। আর স্বাভাবিকভাবেই চুক্তিটিকে স্বাগত জানিয়েছে আজারি প্রশাসন। 

নতুন চুক্তির আওতায় আজারবাইজানের হাতেই থাকবে নাগোর্নো কারাবাখ। আর্মেনিয়া আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে নিকটবর্তী আরো কিছু এলাকা থেকে সরে যাবে।

গত এক সপ্তাহে আর্মেনিয়ার বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হাত থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ শহর উদ্ধার করেছে আজারবাইজান। গত রবিবার তারা রাজধানীর খুব কাছে পাহাড়ের উপর একটি স্ট্র্যাটেজিক শহর উদ্ধার করেছে। যেখান থেকে রাজধানীর উপর নজরদারি চালানো সম্ভব। ফলে চুক্তির বয়ান অনুযায়ী লাভ হলো আজারবাইজানের।

চুক্তির পরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারের বলেছেন, চুক্তি যাতে রক্ষিত হয়, তার দিকে নজর রাখা হবে। কোনো পক্ষই যাতে নতুন করে যুদ্ধ শুরু করতে না পারে, সেদিকে নজর রাখা হবে। বিতর্কিত অঞ্চলে ও দুই দেশের সীমান্তে রাশিয়ার প্রায় দুই হাজার সেনা মোতায়েন করা হবে। যারা শান্তির জন্য কাজ করবে। শুধু তাই নয়, যুদ্ধবন্দিদের দ্রুত হস্তান্তরের ব্যবস্থা করা হবে।

তিনি আরো জানিয়েছেন, আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের সীমান্ত খুলে দেয়া হবে। যে সীমান্ত ব্লকেড তৈরি করা হয়েছিল, তা আর থাকবে না।

আজারি প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে বলেছেন, শুধু রাশিয়া নয়, তুরস্কের সেনাও সীমান্তে মোতায়েন করা হবে। তারাও শান্তির পক্ষে কাজ করবে।

আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী পাশিনিয়ান জানিয়েছেন, চুক্তি মেনে না নেয়া ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। যুদ্ধ বন্ধের জন্য চুক্তি প্রয়োজন ছিল। তবে এই চুক্তি তাকে ও তার দেশের মানুষকে ব্যথিত করেছে। 

বস্তুত চুক্তি সই হওয়ার পরেই আর্মেনিয়ার রাজধানীতে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। সাধারণ মানুষ চুক্তির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন। তারা এ সময় পার্লামেন্ট ও সরকারি ভবনে ভাংচুর করেছে। -বিবিসি ও ডয়চে ভেলে


সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //