ইরানকে নিবৃত্ত করতে বিশ্ববাসী যদি কিছু না করে তাহলে জ্বালানি তেলের দাম "কল্পনাতীত" রকমের বেড়ে যেতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।
সৌদি সিংহাসনের ভবিষ্যত উত্তরাধিকারী যুবরাজ মোহাম্মদ বলেছেন, ‘ইরান আর সৌদি আরবের মধ্যে যদি যুদ্ধ লেগে যায় তাহলে বিশ্ব অর্থনীতিকে তা ধ্বংস করে দেবে। তবে রাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ সমাধান সামরিক বাহিনীর হস্তক্ষেপের চেয়ে অনেক ভালো।’
যুক্তরাষ্ট্রের টিভি চ্যানেল সিবিএস নিউজের ‘৬০ মিনিট’ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যার দায়ও নিয়েছেন সৌদি আরবের যুবরাজ।
দুই সপ্তাহ আগে সৌদি আরবে দুটি তেল শোধনাগারে ড্রোন হামলার পর দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষময় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই হামলায় সেদিন ১৮টি ড্রোন আর সাতটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছিল। যার ফলে সৌদি আরবের তেল উৎপাদন বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সৌদি আরব এই হামলার জন্য তার ইরানকে দায়ী করে আসছে। যদিও ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। যুক্তরাষ্ট্রও দাবি করেছে, ওই হামলার পেছনে ইরানই দায়ী।
যুবরাজ মোহাম্মদ বলেছেন, ‘ইরানকে ঠেকাতে বিশ্ববাসী যদি কঠোর ব্যবস্থা না নেয় তাহলে তাহলে সংঘর্ষময় পরিস্থিতি আরো তীব্র হবে যা বিশ্বের স্বার্থে জন্য ঝুঁকি হবে। এতে তেল সরবরাহ ব্যাহত হবে। যার ফলে তেলের দাম কল্পনাতীত রকম বেড়ে যেতে পারে। যা হয়ত আমরা আমাদের জীবদ্দশায় দেখিনি।’
তিনি জানিয়েছেন, বিশ্বের তেলের চাহিদার ৩০ শতাংশ আসে মধ্যপ্রাচ্য থেকে। বিশ্বের জিডিপির ৪ শতাংশের ক্ষেত্রে এর ভূমিকা রয়েছে।
যুবরাজ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘চিন্তা করুন এই বিষয়গুলো যদি হঠাৎ বাধাগ্রস্ত হয় তাহলে শুধু সৌদি অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে তা নয়, পুরো বিশ্বের অর্থনীতি ধ্বংস হবে।’
সাক্ষাতকারে গত বছর তুরস্কে সৌদি দূতাবাসে সাংবাদিক জামাল খাসোগজি হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে আরো দায়িত্ব নেবেন বলেন জানান মোহাম্মদ বিন সালমান।
তিনি বলেন, ‘সৌদি একজন নেতা হিসেবে আমি এর সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিচ্ছি, বিশেষ করে সৌদি সরকারের হয়ে কাজ করা ব্যক্তিদের দ্বারা যেহেতু এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।’
সৌদি রাজতন্ত্রের কঠোর সমালোচনার জন্য তিনি নিজে সরাসরি এই হত্যাকাণ্ডের আদেশ দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে সৌদি যুবরাজের বিরুদ্ধে। তবে সেই অভিযোগ বরাবরের মতো অস্বীকার করেছেন তিনি। এই বিষয়ে আদৌ তাঁর কোনো তথ্য জানা ছিল কিনা সেই অভিযোগও তিনি নাকচ করে দিয়েছেন।
সৌদি আরবে এই হত্যাকাণ্ডের জন্য, তাদের ভাষ্য অনুযায়ী ‘নীতিবিচ্যুত’ ১১ জন বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে।
যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ‘দ্য ক্রাউন প্রিন্স অব সৌদি অ্যারাবিয়া’ নামের ডকুমেন্টারিতে মার্কিন সম্প্রচার মাধ্যম পিবিএসের মার্টিন স্মিথকে খাসোগি হত্যা নিয়ে বলেছেন, ‘এটা আমার জ্ঞাতসারে হয়েছে। এর দায় আমার ওপর বর্তায়, কারণ ঘটনাটি আমার জ্ঞাতসারেই হয়েছিল।’ খাসোগির মৃত্যুর এক বছর পূর্তিতে ওই ডকুমেন্টারি আগামী ১ অক্টোবর সম্প্রচার করা হবে। -বিবিসি
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh