কুয়েতে অভিবাসী শ্রমিক সংখ্যা কমিয়ে আনতে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা চলছে। গত জুনেই দেশটির সরকার অভিবাসী সংখ্যা অর্ধেক কমিয়ে ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনার ঘোষণা দেয়। এবার পার্লামেন্টে আইন পাস করে সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের পথে হাঁটলো উপসাগরীয় দেশটি।
গতকাল মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) প্রকাশিত ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন এই আইনে দেশটিতে অভিবাসী শ্রমিকের সংখ্যা কমানোর কৌশল ও প্রক্রিয়া নির্ধারণ করতে সরকারকে ১২ মাসের সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে।
অভিবাসী শ্রমিকদের ওপর নির্ভরশীল মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম কুয়েত। তেল সম্পদে সমৃদ্ধ দেশটির বর্তমান জনসংখ্যা ৪৮ লাখ। এর মধ্যে দক্ষ ও অদক্ষ অভিবাসী শ্রমিকের সংখ্যাই প্রায় ৩৪ লাখ। গত কয়েক দশকে এই অবস্থা দাঁড়িয়েছে। নতুন আইনের কারণে অনেক অভিবাসী শ্রমিককেই কুয়েত ছাড়তে বাধ্য করা হবে।
কুয়েত সরকারের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, তেলনির্ভর অর্থনীতির গতিশীলতা ধরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন অভিবাসী শ্রমিকরা। তবে সম্প্রতি করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে তেলের দাম কমে যাওয়ায় কুয়েতের অর্থনীতিতে ধস নেমেছে। অর্থনীতি সক্রিয় রাখতে এবং দেশে অভিবাসীদের সংখ্যায় ভারসাম্য আনতেই নতুন আইন পাস করা হয়েছে।
গত জুনে কুয়েতের প্রধানমন্ত্রী শেখ সাবাহ আল খালিদ আল সাবাহ দেশে অবস্থানরত অভিবাসীর সংখ্যা ৭০ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনার ঘোষণা দেন। ওই সময় তেল খাতে অভিবাসী শ্রমিক নেয়া বন্ধেরও ঘোষণা দেয়া হয়।
নতুন আইন অনুযায়ী, কুয়েতে ভারতীয় অভিবাসীর সংখ্যা ১৫ শতাংশের বেশি এবং মিসর, ফিলিপাইন এবং শ্রীলঙ্কার অভিবাসীর সংখ্যা ১০ শতাংশের বেশি হতে পারবে না। আর বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপাল এবং ভিয়েতনাম থেকে আসা অভিবাসীর সংখ্যা ৫ শতাংশের ওপরে যেতে পারবে না।
অভিবাসীদের চাপে কুয়েতের নাগরিকরাই সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছেন। এ নিয়ে টানাপোড়েন চলছে বহুদিন ধরেই। করোনা মহামারী শুরুর পর ইস্যুটি নতুন করে হালে পানি পায়। আইনপ্রণেতারা অভিবাসী শ্রমিক কমানোর জন্য সরকারের ওপর চাপ বৃদ্ধি করেন। কোটা ব্যবস্থা চালুর পাশাপাশি সরকারি চাকরিতে কর্মরত অভিবাসীদের কুয়েতিদের দিয়ে প্রতিস্থাপনেরও দাবি তোলেন তারা। সূত্র: ব্লুমবার্গ
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : কুয়েত
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh