ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প-কারখানার জন্য ঋণ তহবিল চায় ডিসিসিআই

করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাবে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প-কারখানাকে ১ শতাংশ সুদহারে ঋণ প্রদানের লক্ষ্যে একটি বিশেষ তহবিল গঠনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। 

পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত রফতানিমুখী উৎপাদনখাতকে আগামী ১ বছরের জন্য ঋণের সুদ মওকুফের দাবি করেছে সংগঠনটি।

গতকাল মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি এই দাবি জানায়। 

ডিসিসিআই বলছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে কাজে লাগিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিশেষ ঋণ তহবিল গঠন করতে পারে ও এই ঋণ পেলে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানসমূহ শ্রমিকদের বেতন-ভাতা দিতে পারবে।

সংগঠনটি মনে করছে, করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাব মোকাবেলায় তৈরি পোশাক ছাড়া অন্যান্য সম্ভাবাময় রফতানি খাতকেও রফতানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) স্কিমের আওতায় আনা যেতে পারে। পাশাপাশি ব্যাংকগুলোতে যাতে তারল্য সংকট না হয়, সেজন্য আগামী এক বছরের জন্য ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও’র (সিআরআর) ন্যূনতম মাত্রা কিছুটা শিথিল করা যেতে পারে।

এছাড়া সংগঠনটি অতি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদ্যমান পুণঃঅর্থায়ন তহবিলের সাথে সমন্বয় করে ‘স্বল্প সুদের এমএসএমই অর্থায়ন সুবিধা’ তৈরি করার আহবান জানিয়েছে। একইসাথে তারা অতি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাত রক্ষায় বাণিজ্যিক ভাড়া, বিদুৎ বিল, গ্যাস ও পানির ব্যবহার ও লাইসেন্স নবায়নের উপর আগামী ১ বছর পর্যন্ত ভ্যাট প্রত্যাহার দাবি করেছে।

ব্যবসায়ীদের এই সংগঠনটির মতে, বেসরকারি খাতের আর্থিক ব্যয়ভার লাঘবে সরকার আমদানি,খাদ্য,নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র,স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ব্যবহৃত জিনিসপত্র, মেডিকেল সরঞ্জাম ও রফতানিমুখী উৎপাদনশীল শিল্পের উপর থেকে আগামী ১ বছরের জন্য অগ্রিম কর (এটি) ও ভ্যাট মওকুফ করতে পারে। পাশাপাশি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ব্যক্তিশ্রেণির কর আদায়ে ও কর্পোরেট কর হারে কিছুটা ছাড়ের বিষয় ভাবতে পারে।

এদিকে ডিসিসিআই করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাব থেকে জনগণ ও অর্থনীতিকে মুক্ত করতে আন্তর্জাতিক বন্ধু রাষ্ট্র ও উন্নয়ন অংশীদারদের সাথে একযোগে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছে সরকারকে। অর্থনৈতিক মন্দা যাতে কোনো ক্ষতি করতে না পারে সেজন্য সরকার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও বিশ্বব্যাংকের কাছে বিশেষ জরুরি অর্থায়ন সুবিধার জন্য আবেদন জানাতে পারে যা অর্থপ্রবাহ বাড়াতে বিশেষ সহায়ক হবে। 

পাশাপাশি সব রাষ্ট্রীয় ঋণ পরিশোধের কিস্তি আগামী ১ বছরের জন্য স্থগিত করতে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অংশীদারদের প্রস্তাব দেয়া যেতে পারে।

প্রান্তিক মানুষের সামাজিক সুরক্ষায় সংগঠনটি আর্থসামাজিক ভারসাম্য রক্ষার্থে সামাজিক নিরাপত্তা বলয় বৃদ্ধি করে প্রান্তিক ও শ্রমজীবী, চাকুরি হারানো মানুষ, অতি ক্ষুদ্র ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত যা এসএমইর জন্য প্রধান সাপ্লাইচেইন হিসেবে কাজ করে তাদের অর্ন্তভুক্ত করার অনুরোধ করেছে। সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শক্তিশালী বাজার ব্যবস্থাপনা, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ক্রয় করার সীমা নির্ধারণ ও জনসাধারণে কাছে ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রয় নিশ্চিত করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

ডিসিসিআই আশা করছে, এসব সুপারিশ বিবেচনা করা হলে সরকারি,বেসরকারি উভয়খাত,অর্থনীতি ও প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকবে এবং আমরা এই বৈশ্বিক ক্রান্তিকাল মোকাবেলা করতে পারবো।

অন্যদিকে দেশের অর্থনীতির স্বার্থে করোনাভাইরাস উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সরকার যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, তাকে সাধুবাদ জানিয়েছে দেশের ব্যবসায়ীদের বৃহৎ এই সংগঠনটি। 

একইসাথে অর্থনীতির বৃহত্তর স্বার্থে সরকার যেসব পদক্ষেপ নেবে তার সাথে ডিসিসিআইয়ের একাত্মতা বজায় থাকবে বলে জানিয়েছে। -বাসস

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //