করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের হুঁশিয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার

ইউরোপে আগামী বছরের গোড়ায় করোনাভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ আসতে পারে বলে হুঁশিয়ার করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। 

পুরো ইউরোপ ও যুক্তরাজ্য জুড়ে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। শীত পড়তেই ইউরোপের প্রায় প্রতিটি দেশে নতুন করে করোনার সংক্রমণ শুরু হয়েছে। জার্মানিসহ একাধিক দেশে সংক্রমণের মাত্রা গতবারের চেয়ে অনেকটাই বেশি। 

এই পরিস্থিতিতে ইউরোপে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা করছে ডব্লিউএইচও। সংস্থার করোনা সংক্রান্ত বিভাগের প্রধান ডেভিড নাবারো একটি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ২০২১ সালের গোড়ায় ইউরোপ জুড়ে করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে এবং তাতে ক্ষতির মাত্রা আরো বাড়ার সম্ভাবনা।

নাবারোর বক্তব্য, গরমকালে করোনার জন্য যা যা ব্যবস্থা নেয়ার দরকার ছিল, ইউরোপ তা নেয়নি। গরমে করোনার প্রভাব সামান্য কমতেই মানুষ সব নিয়ম মানা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। সবাই রাস্তাঘাটে বেরিয়ে পড়েছিলেন। নিরাপদ দূরত্ব মানা, মাস্ক ব্যবহার করার মতো নিয়মগুলো কেউ সেভাবে মানেননি। তারই খেসারত দিতে হচ্ছে এখন। ঠান্ডা পড়তেই ফের সংক্রমণ শুরু হয়েছে। এখনো কড়া ব্যবস্থা না নিলে আগামী বছরের গোড়ায় পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

তবে এ ক্ষেত্রেই এশিয়ার প্রশংসা করেছেন তিনি। তার বক্তব্য, এশিয়ার অধিকাংশ দেশে গরমের সময়েও করোনা বিধির প্রাথমিক বিষয়গুলো মেনে চলা হয়েছে। অর্থনীতির জন্য লকডাউন তুলে দিলেও মানুষ অধিকাংশ জায়গায় সতর্ক ভাবে চলাফেরা করেছেন। নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখেছেন। ফলে শীতেও সংক্রমণের মাত্রা যথেষ্ট কম। 

উদাহরণ হিসেবে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার কথা বলেছেন নাবারো। জাপানে গত শনিবার নতুন সংক্রমণের সংখ্যা ছিল দুই হাজার ৫৯৬, দক্ষিণ কোরিয়ায় ৩৮৬।

ভারত ও পাকিস্তানে অবশ্য শীত পড়ার সাথে সাথেই সংক্রমণের পরিমাণ লাফিয়ে বেড়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বক্তব্য, পাটিগণিতের হিসেবে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পায় না। লাফিয়ে বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ- প্রথম সপ্তাহে যদি সংক্রমণের হার আট গুণ বাড়ে, তাহলে দ্বিতীয় সপ্তাহে তা বাড়বে ৪০ গুণ, তৃতীয় সপ্তাহে ৩০০ গুণ ও চতুর্থ সপ্তাহে হাজার গুণ। এটাই করোনার বৈশিষ্ট্য। ইউরোপ এই বিষয়টি বুঝতে না পারলে আগামী কয়েক মাসে সমস্যা বাড়বে।

একদিকে যখন তৃতীয় ঢেউয়ের সতর্কতা জারি করা হচ্ছে, তখন বিভিন্ন দেশে ভ্যাকসিন নিয়ে আলোচনা চলছে। যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, সব ঠিক থাকলে ১১ ডিসেম্বর থেকে ভ্যাকসিন দেয়া চালু হতে পারে। প্রথমে বয়স্ক, অসুস্থ ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ভ্যাকসিন দেয়া হতে পারে। 

ইউরোপেও জানুয়ারির মধ্যে ভ্যাকসিন দেয়া চালু হতে পারে। ভারত জানিয়েছে, দেশে তৈরি ভ্যাকসিন আগামী দুই মাসের মধ্যে বাজারে আনা সম্ভব। প্রতিটি ভ্যাকসিনেরই শেষ পর্যায়ের চূড়ান্ত পরীক্ষা চলছে। ভ্যাকসিন কী ভাবে দেয়া হবে, তা নিয়ে আজ সোমবার (২৩ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ বৈঠক হবে ভারতে। -ডয়চে ভেলে

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //