রোহিঙ্গাদের রেখে সরে না যেতে বিশ্বের প্রতি যুক্তরাজ্যের আহ্বান

যুক্তরাজ্য রোহিঙ্গাদের জন্য জীবন রক্ষাকারী সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ও বিশ্ব সম্প্রদায়কে রোহিঙ্গাদের দুর্দশায় রেখে দূরে সরে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোমিনিক রাব এ আহ্বান জানেয়ছেন।

তিনি বলেন, আজ আমি বিশ্বকে রোহিঙ্গাদের দুর্দশায় রেখে দূরে সরে না যাওয়ার ও নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে যাওয়াদের বাড়িতে নিরাপদে ফিরিয়ে যেতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানাই।

ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট অফিসের (এফসিডিসি) তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাজ্য ৮ লাখ ৬০ হাজার রোহিঙ্গাকে সহায়তা করার জন্য এবং বাংলাদেশকে করোনাভাইরাস ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সহায়তার জন্য ৪৭.৫ মিলিয়ন পাউন্ড নতুন সহায়তার ঘোষণা করেছে।

রোহিঙ্গা জনগণের ওপর চালানো সহিংসতায় অপরাধীদের বিরুদ্ধে জারি করা যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞার পরে এবং যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ ও ইউএনসিএইচআরের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিতব্য দাতা সম্মেলনের আগে এই অতিরিক্ত সহায়তা এলো।

সম্মেলনে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ ও উন্নয়নবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী লর্ড আহমদ মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের দিকে কাজ করার কথা পুনরাবৃত্তি করবেন।

প্রায় ৮ লাখ ৬০ হাজার রোহিঙ্গা আনুষ্ঠানিক শিক্ষা বা কাজের সুযোগ ছাড়াই বাংলাদেশের কক্সবাজারে জনাকীর্ণ শিবিরে বাস করে আসছে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ করে তুলেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘোষিত এই নতুন তহবিল কয়েক হাজার মানুষকে খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবা, পানি ও স্যানিটেশন সরবরাহ করার পাশাপাশি তারা মিয়ানমারে সহিংসতা কারণে মানসিকভাবে যে বিপর্যস্ত হয়েছে সেজন্য তাদের যত্ন ও পরামর্শ প্রদানে ব্যয় করা হবে।

এটি ৫০ হাজার তরুণের শিক্ষা গ্রহণ ব্যবস্থাকে প্রসার করবে, পাশাপাশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য আইসোলেশন ও চিকিত্সা কেন্দ্র তৈরি করবে। এর পাশাপাশি, যুক্তরাজ্যের এই সহায়তা বাংলাদেশের মানুষের জন্যও ব্যয় করা হবে। কারণ এই দেশে সর্বাধিক সংখ্যক রোহিঙ্গা শরণার্থী বাস করছে।

এটি কভিড-১৯ থেকে সুস্থ হতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করবে ও বাংলাদেশকে বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে আরো দৃঢ়তর করতে যুক্তরাজ্য সহায়তা অব্যাহত রাখবে।

রাব বলেছেন, কক্সবাজারে বসবাসকারী লোকেরা কল্পনাতীত কষ্টের মুখোমুখি হয়েছে ও অনেকে সহিংসতার শিকার হয়েছেন। আমরা এই বর্বরতার অপরাধীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছি ও এই নতুন তহবিল শিবিরের জীবন বাঁচাতে এবং করোনাভাইরাসের মতো দুর্যোগুলোকে আরো দৃঢ়তার সাথে মোকাবিলা করতে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে।

তিনি বলেন, আজকের সম্মেলনটি দেশগুলোকে রোহিঙ্গা জনগণের প্রতি সংহতি প্রদর্শনের জন্য একত্রিত করবে, শরণার্থী হিসেবে তাদের আশ্রয় দেয়া দেশগুলোর প্রতি সমর্থন জানাবে ও দেশগুলোকে এই মানবিক সঙ্কটের জন্য তহবিল গঠনের অঙ্গীকার করার আহ্বান জানাবে।

জাতিসংঘের অনুমান, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা করতে এ বছর এক বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। তবে এখনো পর্যন্ত এর অর্ধেকেরও কম সংগ্রহ করা গেছে।

বাংলাদেশে বসবাসরত রোহিঙ্গা শরণার্থী ছাড়াও এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশে এক লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা বসবাস করছে এবং মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আনুমানিক ছয় লাখ মানুষ বাস করছেন। -ইউএনবি

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //