এজাজ ও ফারুকের স্মৃতিতে হুমায়ূন আহমেদ

হুমায়ূন আহমেদের হাত ধরে নাট্য ও চলচ্চিত্র জগতে অনেক গুণী অভিনেতার জন্ম হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজন ডা. এজাজুল ইসলাম ও ফারুক আহমেদ। তারকাখ্যাতি পাওয়া দুই অভিনেতা হুমায়ূন আহমেদ নির্মিত 'তারা তিনজন' সিরিজসহ অসংখ্য নাটকে অভিনয় করেছেন।

আজ হুমায়ূন আহমেদের ৭২তম জন্মদিনে স্মৃতিচারণ করলেন জনপ্রিয় এই দুই অভিনেতা। দুজনে হুমায়ূন সম্পর্কে বলেন, তিনি আসলে মজার মানুষ ছিলেন। তার সঙ্গ পাওয়াটাই ছিল একটা আনন্দ।

এজাজুল ইসলাম বলেন, স্যারের 'ডাক্তার' ডাকটা খুব মিস করি। তার হাত ধরে মিডিয়াতে আসা। কিন্তু এই সময়ে সবচেয়ে বেশি মিস করি স্যারকেই। তিনি থাকলে আমাদের 'তারা তিনজন' সিরিজ এত দিনে আরও অনেক পর্ব তৈরি হতো।'

অভিনেতা ফারুক আহমেদ বলেন, 'হুমায়ূন ভাইয়ের ছোট ভাই আহসান হাবীব আর আমি স্কুল ফ্রেন্ড। তখন স্যার মোহাম্মদপুর থাকতেন, সেই সুবাধে আমি প্রায়ই তাদের বাসায় যেতাম। সে সময় আমি ঢাকা থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। পরবর্তীকালে তার পরিচালনায় ১৯৯১ সালের দিকে বিটিভির শেখ রিয়াজ উদ্দিন বাদশার প্রযোজনায় 'অচিন বৃক্ষ' নামে একটি নাটকে অভিনয় করি। এরপর 'আজ রবিবার'সহ তার প্রায় ১৫০টির মতো নাটকে অভিনয় করেছি।'

হুমায়ূন আহমেদের জন্ম নেত্রকোনার কুতুবপুরে, ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর। বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে শহীদ হন। মায়ের নাম আয়েশা ফয়েজ।

সমকালীন বাংলা সাহিত্যের জননন্দিত লেখক ছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। মধ্যবিত্ত জীবনের কথকতা সহজ-সরল গদ্যে তুলে ধরে পাঠককে মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছিলেন। ১৯৭২ সালে প্রকাশিত হুমায়ূন আহমেদের প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ পাঠকমহলে এতটাই নন্দিত হয়েছিল যে এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি তাকে। ২০১২ সালের ১৯ জুলাই মারণব্যাধি ক্যানসারের কাছে হার মানার আগে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, গীতিকার, নাট্যকার, চলচ্চিত্র পরিচালক─ প্রতিটি ক্ষেত্রেই জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছিলেন তিনি।

বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৯৪ সালে একুশে পদক লাভ করেন তিনি। এ ছাড়া বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮১), হুমায়ূন কাদির স্মৃতি পুরস্কার (১৯৯০), লেখক শিবির পুরস্কার (১৯৭৩), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৯৩ ও ১৯৯৪), বাচসাস পুরস্কারসহ (১৯৮৮) অসংখ্য সম্মাননা পেয়েছেন নন্দিত এই কথাসাহিত্যিক।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের মেধাবী ছাত্র হুমায়ূন আহমেদ পাঠ শেষে ওই বিভাগেই প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। একপর্যায়ে তিনি অধ্যাপনা ছেড়ে লেখালেখি, নাটক ও চলচ্চিত্র নির্মাণে যুক্ত হন। হুমায়ূন আহমেদ একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ দেশে-বিদেশে বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। তিনি কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ২০১২ সালের ১৯ জুলাই নিউইয়র্কে ইন্তেকাল করেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //