আখেরাতের বিশাল সঞ্চয় জমা করার সুবর্ণ সুযোগ

মহান প্রতিপালক আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রত্যেক মুমিনের জন্য এটি একটি অনন্যা উপহার ও অনুগ্রহের মাস হচ্ছে রমজান। 

এ মাসে যে বঞ্চিত হলো, সে আসলে চিরবঞ্চিত হলো। (আদাবুল মুফরাদ : হাদিস ৬৪৬)। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার মাধ্যমে এ মাসে মুমিনের আত্মিক উন্নতি ঘটে। তাকওয়ার পথে অগ্রসর হতে হতে পৌঁছে যায় জান্নাতের নিরাপদ সীমানায়। এ মাসে সে মুক্ত থাকে চিরশত্রু ইবলিসের কবল থেকে। নফস দমে যায় রোজার কষাঘাতে। দয়া-দাক্ষিণ্যের হাত সম্প্রসারিত হয়।

তওবা করে মুমিন গড়ে তুলে নেকির পাহাড়। আমলের বিনিময় বেড়ে যায় বহুগুণ। একটি ফরজ আদায় করে লাভ হয় ৭০ ফরজের সওয়াব। নফল বেড়ে হয় ফরজসম। (তারগিব তারহিব : ২/১১৫)। 

এ মাসের ওমরা যেন একটি হজ। (তিরমিজি : হাদিস ৯৩৯; আবু দাউদ : হাদিস ১৯৮৬)

পুরো মাস জুড়ে চলে রহমত ও বরকতের খোদায়ী বণ্টন। প্রথম ১০ দিনে দয়াময় রব রহমতের দুয়ার উন্মুক্ত করে দেন পূর্ণরূপে। পরের ১০ দিন চলে বরকতের। শেষ ১০ দিন মাগফেরাত ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির। (মুসলিম : হাদিস ১০৭৯)। 

রমজানের প্রতি সন্ধ্যায় ক্ষমা করা হয় অসংখ্য ঈমানদার মানব-মানবীকে। (মুসনাদে আহমদ : হাদিস ১৬৯৬)। এ রমজান মুমিন-হৃদয়ে নির্মলতা আনে হেতু স্বাভাবিকভাবেই কোরআনের প্রতি আকর্ষিত হয়ে ওঠে প্রতিটি মুমিন। তাই কোরআন নাজিলের এ মাসে চলতে থাকে কোরআনের ধারাবাহিক তেলাওয়াত। কোরআনের মর্ম অনুধাবনের নানা চেষ্টা-প্রচেষ্টা। রাসূলে কারীম (সা.) এ মাসে সর্বাধিক পরিমাণে কোরআন-চর্চা করতেন। (বুখারি : হাদিস ১৯০২)

এছাড়াও এ মাসে চলে নফল নামাজের নিয়মিত আমল। প্রতিটি রাতের সূচনাতে শুরু হয় দীর্ঘ তেলাওয়াত দিয়ে তারাবি নামাজ। বান্দা সুযোগ পেয়ে যায় মহান রবের কুদরতি কদমে অজস্র সিজদা দেয়ার ও লাভ করে অতীতের গুনাহ থেকে ক্ষমার পরওয়ানা। (বুখারি : হাদিস ১৮৯৯)

রাসূল (সা.) বলেন, ‘আমার উম্মতের রমজান মাস পাঁচটি বৈশিষ্ট্যে বিশেষায়িত। (পানাহার বর্জনজনিত) রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর নিকট মিশকের চেয়েও প্রিয়। রোজাদারের জন্য মৎস্যরাও ক্ষমার সুপারিশ করে। তার জন্য প্রত্যহ জান্নাতকে সজ্জিত, সুশোভিত করা হয়। শয়তানকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়। রমজানের শেষ রজনীতে তাকে ক্ষমা করে দেয়া হয়।’ (মুসনাদে আহমাদ : হাদিস ৭৯০৪)। 

তাছাড়া রোজা হলো মুমিনের ঢালস্বরূপ। (মুসনাদে আহমাদ : হাদিস নং ৮৯৭২)। তাই জাহান্নাম তার ক্ষতি করতে পারে না। আল্লাহ তায়ালা নিজে তাকে রক্ষা করবেন। নিজ কুদরতি হাতে রোজার প্রতিদান দেবেন। (মুসলিম : ১১৫১)। স্বয়ং রোজাও রোজাদারের জন্য সুপারিশ করবে। (মুসনাদে : ৬৫৮৯)

রোজা হলো সংযম-সংবরণের মাস। আত্মশুদ্ধি ও তাকওয়া অর্জনের মাস। উদারতা ও সহমর্মিতার মাস। পুণ্যার্জন ও গুনাহ বর্জনের মাস। জান্নাত লাভের মাস, জাহান্নাম থেকে মুক্তির মাস। মহান রব্বে কারীমের নৈকট্য অর্জন ও আখেরাতের বিশাল সঞ্চয় জমা করার সুবর্ণ সুযোগ হলো এ রমজান।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //