ভয়াবহ নির্যাতনের বর্ণনা দিলেন সুমি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬ নভেম্বর ২০১৯, ১২:৪০ পিএম | আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৯, ০৮:৫০ এএম

সৌদি আরবে ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার নারী শ্রমিক সুমি আক্তার গতকাল শুক্রবার দেশে ফিরেছেন। সন্ধ্যায় নিজ জেলা পঞ্চগড়ে ফিরে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে নির্মম নির্যাতনের বর্ণনা দেন।

সুমি জানান, প্রতি রাতেই শরীরের ওপর চলত নির্যাতন। প্রতিবাদ করলেই মারধর। একপর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে গেলেও তারা থেমে যেত না। ওই অবস্থায়ই শরীরের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ত। প্রথমে যেই বাসায় ছিলাম, সেই বাসার মালিক চালাত এমন নির্যাতন। একপর্যায়ে ওই মালিক আমাকে বিক্রি করে দেয় আরেক জায়গায়। ওই বাসায় গিয়ে পড়ি আরেক বিপদে। সেখানেও চলে শারীরিক নির্যাতন।

নতুন মালিক বলল, বাংলাদেশি প্রায় ৪ লাখ টাকায় আমাকে কিনেছে সে। তোকে কিনে এনেছি। তোর সঙ্গে যা ইচ্ছা তা-ই করব। এভাবে প্রতি রাতে আমার ওপর চলত নির্যাতন।

সুমি জানান, সৌদিতে তাকে একটি রুমে আটকে রেখে দিনের পর দিন নির্যাতন করা হয়েছে। সৌদিতে নির্যাতিত হয়ে আমি ভেবেছিলাম আর কোনোদিন দেশে ফিরতে পারব না। সেখানে যাওয়ার পর প্রথম কর্মস্থলে মালিক তাকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করতেন, মারধর করতেন, হাতের তালুতে গরম তেল ঢেলে দিতেন এবং কক্ষে আটকে রাখতেন।

তিনি আরো জানান, এক পর্যায়ে সুমি অসুস্থ হয়ে পড়লে ওই মালিক তাকে না জানিয়ে সৌদি আরবের ইয়ামেন সীমান্ত এলাকায় নাজরানের এক ব্যক্তির কাছে প্রায় ২২ হাজার রিয়ালে বিক্রি করে দেন। ওই মালিকও তাকে নির্যাতন করেন। উদ্ধার হওয়ার আগে ১৫ দিন তাকে ঘরের মধ্যে আটকে রাখা হয়েছিল। ঠিকমতো খাবার দেয়া হয়নি। এক সময় খুব কান্নাকাটি করে স্বামীর সঙ্গে একটু কথা বলার জন্য ফোনটি চেয়ে নেন সুমি।

তারা ফোন ফিরিয়ে দিলে বাথরুমে গিয়ে একটি ভিডিও ধারণ করেন সুমি। সেই ভিডিওতে নিজেকে নির্যাতনের কথা জানিয়ে তার স্বামীর কাছে পাঠিয়ে দেন তিনি। পরে ওই ভিডিওটি তার স্বামী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন এবং বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীদের অবহিত করেন।

পরবর্তীতে অনলাইনে ভিডিওটি ভাইরাল হলে বিষয়টি সরকারের নজরে আসে। এরপর দেশে ফিরিয়ে আনা হয় সুমিকে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh