ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১০:০৩ এএম | আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০২:৪৭ পিএম
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ২০১৭ সালে তালেবান নিয়ন্ত্রিত এলাকায় প্রবেশের সুযোগ পায়। ছবি: বিবিসি
তালেবান বলেছে, শান্তি আলোচনা ভেঙ্গে যাওয়ায় আমেরিকা সবেচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শান্তি চুক্তি সম্পর্কিত আসন্ন বৈঠক হঠাৎ বাতিল করায় প্রতিক্রিয়া হিসেবে এ কথা জানিয়েছে তালেবান।
এক বিবৃতিতে তালেবান বলেছে, ‘শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত শান্তি আলোচনায় সবকিছুই ঠিকমতো চলছিল। ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্ত আফগানিস্তানে থাকা মার্কিন নাগরিকদের জীবন বিপন্নের কারণ হবে।’
আফগানিস্তানে তালেবানের হামলায় এক মার্কিন সৈন্য নিহত হওয়ার পর সংগঠনটির সঙ্গে শান্তি আলোচনা শনিবার বাতিল করে দেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। শান্তিচুক্তি বাতিলের বিষয়ে ট্রাম্পের আকস্মিক ঘোষণার ঠিক ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই প্রতিক্রিয়া জানিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে তালেবান। যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের ক্যাম্প ডেভিডে রবিবার এই বৈঠক হওয়ার কথা ছিল।
তালেবানের মুখপাত্র জাবিহউল্লাহ মুজাহিদ বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করে বলেন, ‘একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে শান্তি আলোচনা থেকে বেরিয়ে আসার বিষয়টি পরিপক্বতা ও অভিজ্ঞতার অভাবে হয়েছে। তালেবান ও আফগান সরকার আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর আলোচনায় বসতে সম্মত হয়েছে।’ যদিও আফগানিস্তানের সরকার এখনো বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘উভয় পক্ষই (যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবান) শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর ও ঘোষণা বিষয়ে জোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তবে হঠাৎ মার্কিন প্রেসিডেন্ট তা ভেস্তে দিলেন। যুক্তরাষ্ট্র যে শান্তিতে বিশ্বাসী না- সেটি আবারো বাকি বিশ্বের কাছে প্রকাশিত হলো।’
তিনি আরো বলেন, ‘যুদ্ধের পরিবর্তে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলাম। এখন যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের দেশ থেকে বিদেশি দখলদারি শেষ না হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা সন্তুষ্ট হব না।’
কাতারের রাজধানী দোহায় যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবানের মধ্যে নয় দফা আলোচনা হয়েছে। গত সোমবার শীর্ষ এক মার্কিন কর্মকর্তা 'নীতিগতভাবে' শান্তিচুক্তির ঘোষণা দেন। প্রস্তাবিত এই চুক্তিতে বলা হয়েছে, আগামী ২০ সপ্তাহের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান থেকে ৫৪০০ সৈন্য প্রত্যাহার করবে। এর বিনিময়ে তালেবান নিশ্চয়তা দেয় যে, দেশটির মাটি কখনোই সন্ত্রাসীরা ব্যবহার করবে না।
বর্তমানে আফগানিস্তানে প্রায় ১৪ হাজার মার্কিন সেনা রয়েছে। ২০০১ সালে মার্কিন হস্তক্ষেপের পর থেকে যেকোনো সময়ের তুলনায় এখন আফগানিস্তানের আরো বেশিসংখ্যক অঞ্চল তালেবানের নিয়ন্ত্রণে আছে।
২০০১ সালের পর থেকে আন্তর্জাতিক বাহিনীর প্রায় তিন হাজার ৫০০ সদস্য আফগানিস্তানে নিহত হয়েছে, এদের মধ্যে মার্কিন সৈন্য দুই হাজার ৩০০’র বেশি ।
ব্রাউন ইউনিভার্সিটির ওয়াটসন ইন্সটিটিউট এক হিসেবে বলেছে, আফগানিস্তানে মার্কিন নেতৃত্বে সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর প্রায় ৫৮ হাজার সদস্য নিহত হয়েছে। এছাড়া ৪২ হাজার যোদ্ধা মারা গেছে। -বিবিসি ও রয়টার্স