দূর্গাসাগর দীঘির পথে

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১০:৫৬ এএম | আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১০:৫৬ এএম

দূর্গাসাগর দীঘির অপরূপ সৌন্দর্য। ছবি: সংগৃহীত

দূর্গাসাগর দীঘির অপরূপ সৌন্দর্য। ছবি: সংগৃহীত

বরিশালের উল্লেখযোগ্য স্থানগুলোর কথা বলতে গেলেই বলতে হয় দূর্গাসাগর দীঘির কথা। দূর্গাসাগর দীঘি বরিশাল শহর থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে, স্বরুপকাঠি বরিশাল সড়কের মাধবপাশায় অবস্থিত। রাজা শিব নারায়ন ১৭৮০ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন সময়ে পানির সংকট নিরসনের জন্য দূর্গাসাগর দীঘি স্থাপন করেছিলেন। বাংলার বারো ভূইয়াদের একজন ছিলেন তিনি। স্ত্রী দুর্গাবতীর প্রতি ভালোবাসার গভীরতা প্রমাণের জন্যই নাকি তিনি রাজকোষ থেকে ৩লাখ টাকা ব্যয়ে দিঘীটি খনন করান। কথিত আছে, রানী দুর্গাবতী একবারে যতোদুর হাঁটতে পেরেছিলেন ততখানি জায়গা নিয়ে এ দিঘী খনন করা হয়েছে। জনশ্রুতি অনুযায়ী, এক রাতে রানী প্রায় ৬১ কানি জমি হেঁটেছিলেন। রানী দূর্গাবতীর নামেই দিঘীটির নামকরণ করা হয় দুর্গাসাগর দিঘী।

এই দীঘিটির জলাভূমির আয়তন ২৭ একর এবং জমিসহ মোট আয়তন ৪৫.৪২ একর। দূর্গাসাগর দীঘির তিন দিকে রয়েছে তিনটি ঘাটলা এবং মাঝখানে রয়েছে টিলা কিংবা ছেড়াদ্বীপের মতো স্থান।

দূর্গাসাগর দীঘির পাড়ে রয়েছে অসংখ্য গাছ গাছালি। রয়েছে সুপারি, শিশু, নারকেল, মেহগনি সহ আরো নাম না জানা অনেক গাছ। কালের পরিক্রমায় দীঘিটি তার সৌন্দর্য হারালেও এখনো অনেক ঔজ্জ্বল্য নিয়ে টিকে আছে দীঘিটি। বর্তমানে জেলা প্রশাসন এই দীঘির রক্ষণাবেক্ষণে কাজ করছেন।

বর্ষায় কিংবা যেকোনো ঋতুতে এই দীঘিতে বেড়াতে আরামদায়ক হলেও শীত মৌসুমে অন্যরকম অনুভূতির দেখা মিলে। কারণ শীতকালে সাইবেরিয়া থেকে হাজারও পাখি এসে ভিড় জমায় দূর্গাসাগর দীঘির পাড়ের গাছের ডালে ডালে। অপরূপ সৌন্দর্যে ভরে যায় স্থানটি। শীতকালে দীঘি ও তার চারপাশ মুখরিত থাকে বালিহাঁস, সরাইলসহ আরো ৬ প্রজাতির পাখিদের কলকাকলিতে। প্রায় আড়াইশ বছর আগে খনন করা এই দীঘিটির সৌন্দর্য দেখতে প্রায়ই লোকসমাগম ঘটে এখানে। 

যাওয়ার উপায়

সড়কপথে ঢাকা থেকে বরিশাল যেতে সময় লাগে ৬-৮ ঘন্টা। ঢাকার গাবতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে ভোর ৬ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত বাস ছাড়ে। ঢাকা থেকে বরিশালগামী বাসগুলো হলো ঈগল পরিবহন, হানিফ পরিবহন, শাকুরা পরিবহন ইত্যাদি। এসি ও নন এসি গাড়ির ভাড়া ৫০০-৭০০ টাকা। 

বরিশাল গেলে সড়কপথের চেয়ে নৌপথের যাতায়াত সহজ। ঢাকার সদরঘাট থেকে রাত ৮/৯ টার মধ্যে সুরভি ৮, সুন্দরবন ৭/৮, পারাবত ১১, কীর্তনখোলা ১/২ লঞ্চগুলো বরিশালের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। রাতে যাত্রা করা লঞ্চগুলো ভোর পাঁচটায় গিয়ে বরিশাল পৌঁছায়।এসব লঞ্চে ডেকের ভাড়া ১৫০, ডাবল কেবিনের ভাড়া ১৬০০ এবং ভিআইপি কেবিন ভাড়া ৪৫০০ টাকা। 

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh