ত্রিদেশীয় টি-টুয়েন্টি সিরিজ
প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১০:১৯ পিএম | আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১২:০৩ পিএম
জিম্বাবুয়েকে ৩৯ হারিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজের এক ম্যাচ হাতে রেখেই ফাইনালে উঠে গেছে বাংলাদেশ।
অবশ্যই এর আগে জিম্বুবয়েকে ১৭৬ রানের লক্ষ্য বেধে দেয়ার পরই বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তরা অনেকটা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল যে, বাংলাদেশই জিততে যাচ্ছে এই ম্যাচে। শেষ পর্যন্ত বোলারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে সেটাই সম্ভব হলো এবং জিম্বাবুয়েকে ৩৯ রানে হারিয়ে সবার আগে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে পৌঁছে গেলো সাকিব আল হাসানের দল।
আজ বুধবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় মাঠে নামে দু’দল। যেখানে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭৫ রান করে টাইগাররা। জবাবে শেষ বলে অলআউট হওয়ার আগে ১৩৬ করে জিম্বাবুয়ে।
১৭৬ রানের লক্ষ্যে প্রথম দুই ওভারে দুই উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। ওপেনিং ওভারে আসা মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন মাত্র এক রান দিয়ে ব্র্যান্ডন টেইলরের উইকেট তুলে নেন। পরের ওভারে রেজিস চাকাভাকে সরাসরি বোল্ড করেন সাকিব আল হাসান। দীর্ঘদিন পর দলে ফেরা শফিউল ইসলামও নিজের প্রথম ওভারে উইকেটের দেখা পান। শন উইলিয়ামসকে ব্যক্তিগত দুই রানে আফিফ হোসেনের ক্যাচে ফেরান তিনি।
নিজের অভিষেক ম্যাচে নিজের প্রথম ও দলীয় সপ্তম ওভারে উইকেটের দেখা পেলেন আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। মাতুমবদজিকে ব্যক্তিগত ১১ রানে ফেরান এই লেগস্পিনার। পরের ওভারেই রায়ান বার্লকে সরাসরি বোল্ড করে নিজের দ্বিতীয় উইকেট তুলে নেন শফিউল ইসলাম। আর নবম ওভারে ফের বোলিং করতে এসে উইকেটের দেখা পান আমিনুল। এবার ওপেনার হ্যামিল্টন মাসাকাদজাকে এলবির ফাঁদে ফেলেন তিনি। ২৫ বলে ২৫ রান করেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক।
রিচমন্ড মুতুমবামিকে বিদায় করে নিজের তৃতীয় উইকেট তুলে নেন এ ম্যাচে টাইগারদের সবচেয়ে সফল বোলার শফিউল। ৩২ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় জিম্বাবুয়ের হয়ে দলীয় সর্বোচ্চ ৫৪ রান করেন এই ব্যাটসম্যান। দলীয় শেষ ওভারে বল করতে আসা মোস্তাফিজুর রহমান দুই উইকেট তুলে নেন। ২৭ রানে থাকা কাইল জার্ভিসকে বিদায় করে আবার দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে ৫০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েন কাটার মাস্টার। এর আগে সাকিব এই রেকর্ড গড়েছিলেন।
বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে শফিউল সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট পান। মোস্তাফিজ ও আমিনুল দুটি করে উইকেট ভাগ করেন। এছাড়া সাইফউদ্দিন ও সাকিব একটি করে উইকেট শেয়ার করেন।
এর আগে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করা বাংলাদেশের হয়ে উদ্বোধনী জুটিতে ৪.৫ ওভারে ঝড়ো ৪৯ রান তোলেন লিটন দাশ ও নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে পঞ্চম ওভারে কাইল জার্ভিসের বলে তার কাছে ক্যাচ দিয়ে মাঠ ছাড়েন শান্ত (১১)। আর পরের ওভারেই ক্রিস এমপোফুর বলে তুলে মারতে গিয়ে নেভিল মাদজিভাকে ক্যাচ দেন লিটন। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান ২২ বলে ৪টি চার ও দুটি ছক্কায় ৩৮ রান করেন।
দলীয় ৬৫ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ব্যক্তিগত ১০ রান করে রায়ান বার্লের বলে আউট হন তিনি। কিন্তু এরপর মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ দ্রুত ব্যাট চালিয়ে ১২তম ওভারে দলীয় ১০০ রান পূরণ করেন।
চতুর্থ উইকেট জুটিতে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে ৭৮ রান করে ফেরেন মুশফিকুর রহিম। টিনোটেন্ডা মাতুমবদজি বলে আউট হওয়ার আগে ২৬ বলে ৩ চার ও এক ছক্কায় ৩২ করেন মুশফিক। আর শেষে ওভারে আউট হন দুর্দান্ত ব্যাটিং করা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। কাইল জার্ভিসের বলে আউট হওয়া এই ডানহাতি ৪১ বলে এক চার ও ৫টি ছক্কায় ঝড়ো ৬২ রান করেন। এটি তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে চতুর্থ হাফসেঞ্চুরি। একই ওভারে মোসাদ্দেক হোসেন তুলে মারতে গিয়ে ব্যক্তিগত ২ রানে বিদায় নেন। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ৬ রানে অপরাজিত থাকেন।
জিম্বাবুয়ের হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট পান পেসার কাইল জার্ভিস। আর দুটি উইকেট তুলে নেন ক্রিস এমপোফু। এছাড়া বার্ল ও মুতুমবোদজি একটি উইকেট পান।
বাংলাদেশ দলে এ ম্যাচে আনা হয় তিন পরিবর্তন। পেসার শফিউল ইসলাম দলে ঢুকেছেন। আর অভিষেক হলো ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত ও লেগস্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের।