দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে: প্রধানমন্ত্রী

মাদক, সন্ত্রাস,  ক্যাসিনো ও দুর্নীতিবিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘ক্যাসিনো ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সমাজের সব স্তরে অভিযান অব্যাহত থাকবে। ক্যাসিনো-দুর্নীতির সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’ 

আজ বুধবার (১৩ নভেম্বর) জাতীয় সংসদের প্রশ্ন-উত্তরে একাধিক সংসদ সদস্যের পৃথক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সামাজিক অপরাধের বিরুদ্ধে জেলা, উপজেলা ও পৌরসভাসহ সব সেক্টরে ও স্থানে সরকারের চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশের কারা সিঙ্গাপুরে ক্যাসিনো খেলেছে, তাদের তথ্য চেয়ে সে দেশের সরকারকে অনুরোধ করা হয়েছে।’

জাতীয় পার্টির রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইতোমধ্যে কঠোর অভিযান পরিচালনা করে ক্যাসিনোর আস্তানাগুলো উচ্ছেদ করেছে। সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে আদালতে সোপর্দ করেছে। ভবিষ্যতে যেন কেউ এ ধরনের অবৈধ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে না পারে, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি অব্যাহত আছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গত ১০ বছরে দুর্নীতি দমন কমিশন ১৩ হাজার ২৩৮টি অভিযোগের অনুসন্ধান, ৩ হাজার ৬১৭টি মামলা দায়ের এবং ৫ হাজার ১৭৯টি চার্জশিট দাখিল করেছে।’

জাতীয় পার্টির মুজিবুল হকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সব দুর্নীতিবাজকে আইনের আওতায় আনতে দুর্নীতি দমন কমিশন কাজ করে যাচ্ছে। দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের রাজনৈতিক ব্যক্তি ছাড়া সরকারি কর্মচারীসহ অন্য যেসব ব্যক্তি জড়িত রয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণের পাশাপাশি ক্যাসিনো, জঙ্গিবাদ, মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে।’

সরকার প্রধান বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন ব্যক্তির সম্পদের তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দিয়েছে। এছাড়া কারা কারা অভিজাত গাড়ি কিনেছেন, তদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের কাজ চলমান রয়েছে। বাংলাদেশের কোন কোন ব্যক্তি সিঙ্গাপুরে ক্যাসিনো খেলেছেন, সে সম্পর্কিত তথ্য চেয়ে সিঙ্গাপুর সরকারকে অনুরোধ করেছে দুদক।’

সাতক্ষীরা-২ আসনের মীর মোস্তাক আহমেদ রবির প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা বলেন, ‘দুর্নীতি ও অবৈধ অর্থ সম্পদ অর্জনের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে।’

জাতীয় পার্টির বেগম রওশন আরা মান্নানের প্রশ্নের জবাবে সরকার প্রধান বলেন, ‘দলমত নির্বিশেষে সব ধরনের অপরাধীর বিরুদ্ধে আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে। ক্যাসিনো ও ঘুষসহ সব ধরনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে। রাষ্ট্র ও সমাজের সব স্তর থেকে অপরাধ নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

জাতীয় পার্টির সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্নীতির বিষবৃক্ষ সম্পূর্ণ উপড়ে ফেলে দেশের প্রকৃত আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য একটি সুশাসনভিত্তিক প্রশাসনিক কাঠামো তৈরি করতে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’

জাতীয় পার্টির মসিউর রহমান রাঙ্গার প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা বলেন, ‘সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার বিবেচনায় দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোয় প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানিরও কোনো পরিকল্পনা আমাদের নেই। বাংলাদেশ থেকে ভারতের ত্রিপুরায় বাল্ক এলপিজি রপ্তানির কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে আমাদের বেসরকারি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান বিদেশ থেকে আমদানি করা এলজিপি গ্যাস সিলিন্ডারে ভরে ভারতে রপ্তানি করে মুনাফা অর্জন করতে পারবে। এতে বাংলাদেশে কোনো ধরনের জ্বালানি সমস্যা সৃষ্টি তো হবেই না, উপরন্তু আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের আরো একটি নতুন ক্ষেত্র উন্মোচিত হলো।’

এই সংসদ সদস্যের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারে ভারতের সঙ্গে এসওপি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর ফলে ভারত আমদানি-রপ্তানির জন্য এই বন্দর দুটি ব্যবহার করতে পারবে। এটি উভয় দেশের জন্যই লাভজনক। ভারতের পাশাপাশি অদূর ভবিষ্যতে নেপাল ও ভুটান আমাদের বন্দর ব্যবহারের সুযোগ নেবে বলে আশা করি।’

চীনের দক্ষিণ-পঞ্চিমাঞ্চলের রাজ্যগুলো এ বন্দর দুটি ব্যবহার করতে চাইলে স্বাগত জানানো হবে বলেও তিনি জানান।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //