বুদ্ধিজীবী দেখ সবে

এক সময় বাংলাদেশে ‘বুদ্ধিজীবী’ শব্দটির বিশেষ কদর ছিল। আজিকালি ইহার জনপ্রিয়তায় মনে হয় সামান্য ভাঁটা লাগিয়াছে। সম্ভবত সাখাওয়াত টিপু ব্যতীত আর কেহ এখন বইপত্রের শিরোনামায় ‘বুদ্ধিজীবী’ শব্দটি বড় একটা এস্তেমাল করেন না। হায়রে কপাল মন্দ! 

বুদ্ধিজীবী কে? একদা এই প্রশ্নের উত্তর লেখা কঠিন বলিয়া বিবেচিত হইত। বুদ্ধিজীবী বলিতে অলিখিত ভাষায় বুঝাইত ‘বড় বড় বুদ্ধিজীবী’। একটু পরে বুদ্ধিজীবী শব্দের একটি ব্যাপক সংজ্ঞাও গ্রহণযোগ্য বলিয়া বিবেচিত হইল। বিদ্যা বা বুদ্ধির সহিত যাঁহাদের শ্রম জড়িত তাহাদিগকেই ব্যাপক সংজ্ঞায় বুদ্ধিজীবী গণ্য করা যায়- এই সত্য আর অপরিচিত রহিল না। 

এই সত্যে সন্দেহ যাহাদের, তাহাদের বলা হইল- ‘বলুন দেখি, বুদ্ধিজীবী নহে  কে?’ প্রশ্নকর্তা দেখাইয়া দিলেন, মানুষ মাত্রেই বুদ্ধিজীবী- কারণ মানুষ কথা বলে। আর কথার মহাদেশ ভাষা। ভাষাই একমাত্র প্রতিজ্ঞা যাহা মানুষকে আর দশ প্রজাতির প্রাণী হইতে আলাদা স্বীকার করাইয়াছে। এই ভাষাই মানুষের সমাজ, সংস্কার ও বিজ্ঞানের জননী। মানুষ আর ভাষাকে আলাদা করা যায় না। তাই মানুষ বলিতেই বুদ্ধিজীবী। মানুষ ছাড়া ভাষা হইলেও হইতে পারে, কিন্তু ভাষা ছাড়া মানুষ হয় না। 

ন্যূনতম বুদ্ধির ব্যবহার না করিয়া- কথায় বলে কিনা- কেহ কেহ ভাজা মাছটিও উল্টাইয়া খাইতে পারে না। মানুষের এই বুদ্ধি কিন্তু মানবাতীত আর আরÑ বিশেষ গৃহপালিত প্রাণীরও আছে। তবে মাত্র মানুষই এই দাবির প্রণেতা। তাই কে বুদ্ধিজীবী আর কে বুদ্ধিজীবী নহে- এই প্রশ্ন প্রায় তাৎপর্য হারাইয়াছে। তবে মানুষের প্রকারভেদ স্বরূপ বুদ্ধিজীবী আর শ্রমজীবী শব্দের প্রয়োগ শুরু এখানেই।

মানব সমাজে ভাষার পর দ্বিতীয় গুরুতর সত্য কি? কেহ বলিবেন পরিবার, কেহ বলিবেন সমাজ, কেহ বা রাষ্ট্র পর্যন্ত যাইবেন। এই সকলের গোড়ায় আছে শ্রমের বিভাগ- কে কোন কাজ বিশেষ করিবেন। এই ভাগ যেমন সমাজে বা রাষ্ট্রে, তেমন পরিবার পরিকল্পনায়ও আছে। এখান হইতেই সমাজের সহি বড় শ্রমবিভাগ কায়েম হইয়াছে। একদল মানুষ যদি ‘শ্রমজীবী’ হয়, তো আর এক দল হয় ‘বুদ্ধিজীবী’। কিন্তু ‘সকল মানুষই বুদ্ধিজীবী’- এই কথার মতন ‘সকল মানুষই শ্রমজীবী’ কথাটিও অসত্য নহে। কেহ বা বাদশাহ হইয়াও নিজের হাতে টুপি সেলাই আর কোরান শরিফ নকল করিয়া থাকেন। 

তবে ‘কে বুদ্ধিজীবী’ এই প্রশ্নের উত্তর অপেক্ষা ‘কে বুদ্ধিজীবী নহে’ প্রশ্নটির উত্তর খানিক বেশি সহজ মনে হইয়াছে মানুষের। বুদ্ধিজীবী আর শ্রমজীবী এক্ষণে পরষ্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী হইয়া দাঁড়াইয়াছে। সমস্যা দেখা দেয় যখন শ্রমজীবীদের মধ্যেও বুদ্ধিজীবীর জন্ম হয়। ইতালির প্রসিদ্ধ বুদ্ধিজীবী আন্তোনিয়ো গ্রামসির ‘ভাষায়’ ইঁহাদের নাম দাঁড়ায় ‘অর্গানিক ইন্টেলেকচুয়াল’ বা রক্তমাংসের বা কোলের বুদ্ধিজীবী। ইঁহারাই সচরাচর সমাজ ও রাষ্ট্রবিপ্লবের ইন্ধন দিয়া থাকেন। এক বিচারে দুনিয়ার সকল বুদ্ধিজীবীই কোন না কোন শ্রেণীর ক্রোড়ে জন্মাইয়াছেন। পরে কেহ কেহ শ্রেণী বাছিয়া লইয়াছেন মাত্র। 

বিপরীর দিক হইতে দেখিলে দেখা যায়, কখনো বা সংকটের কাল দেখা দিলে, বুদ্ধিজীবী শ্রমজীবীতে পরিণত হয়। তখন এটাকে দেশের রোগের আলামত হিশাবে দেখার রীতি চালু হয়। দুনিয়ার ইতিবৃত্তে এহেন উদাহরণ ঢের ঢের পাওয়া যায়। আন্তোনিয়ো গ্রামসি (১৮৯০-১৯৩৭) যাঁহাদের নাম রাখিয়াছিলেন ‘ট্র্যাডিশনাল ইন্টেলেকচুয়াল’ বা গতানুগতিক বুদ্ধিজীবী তাঁহাদের অনেকেই এই সংকটে পড়িয়া প্রায় শ্রমজীবীতে পরিণত হইয়া থাকেন। মহান চীনের ইতিহাসে- উনবিংশ শতকের শেষার্ধে এবং বিংশ শতকের গোড়ায়- এই সংকটের কিছু প্রবল উদাহরণ পাওয়া যায়। প্রসিদ্ধ বুদ্ধিজীবী লু সুন (১৮৮০-১৯৩৬) এই জাতীয় পুরানা বা গতানুগতিক বুদ্ধিজীবীদের লইয়া অনেক কাহিনী লিখিয়াছিলেন। তাঁহার আঁকা এই সকল গতানুগতিক ও রক্তমাংসের বুদ্ধিজীবীর ছবি লইয়া এখনও আলোচনা করা হইতেছে। লু সুনের আঁকা বিখ্যাত ‘আছ কু’ নামক রক্তমাংসের বুদ্ধিজীবীর গল্পটি অনেকেই জানেন। ১৯১১ সালের বিপ্লবে শরিক হওয়া ইঁহার কাল হইয়াছিল। 

লু সুনের লেখা বিস্তর কাহিনী আছে যেখানে বুদ্ধিজীবীর ফাঁড়াই গল্পের মূল আখ্যান। একটা কাহিনীতে তিনি দেখাইয়াছেন চীনের গতানুগতিক বুদ্ধিজীবীরা কিভাবে ধীরে ধীরে শ্রমজীবীতে পরিণত হইতেছেন। লু সুন শ্রমজীবী মাত্রকেই আদর্শ মানব পরিচয়ে চিত্রিত করেন নাই। শ্রমজীবীও কেমন করিয়া অন্য শ্রমজীবীর সহিত নিষ্ঠুর আচরণ করিতে পারে তাহার জীবন্ত ছবি তিনি একাধিক জায়গায় আঁকিয়াছেন। বুদ্ধিজীবী হইতে শ্রমজীবী। শ্রমজীবী হইতে ভিখারি কিংবা চোর। এই পরিণতির পরাকাষ্ঠা দেখা গিয়াছে অক্ষর প্রেমিক কং ইয়িজির জীবনে। 

লু সুনের একটি স্বল্পদৈর্ঘ্যের গল্প ‘কং ইয়িজি’। এই গল্পটি চীনদেশের প্রথম বড় প্রজাবিপ্লবÑ যাহা ১৯১১ সালে সুন ইয়াৎসেনের নেতৃত্বে ঘটে তাহার আগের যুগের ভূমিতে স্থাপিত। লুঝেন নামক একটি ক্ষুদে মফস্বল শহরের উপকণ্ঠে ‘সমৃদ্ধি’ নামক একটি অতি সাধারণ পানশালার একজন কিশোর কর্মচারীর দৃষ্টিতে তিনি ঐ শহরের শ্রমজীবী, নিম্ন-মধ্যবিত্ত ব্যবসায়ী ও গতানুগতিক বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে যাঁহারা সন্তুষ্ট ও যাঁহারা ব্যর্থ- এই চারি শ্রেণীর মানুষের ছবি আঁকিয়াছেন। এই ছবি শুধুুমাত্র চীনদেশের হইলেও ইহাতে আজ আমাদের দেশকেও বারে বারে খুঁজিয়া পাওয়া যাইবে। গল্পটি মাত্র একশ বছর আগে লেখা। কিন্তু এখনও ইহাকে পুরানা বলা যায় কিনা সন্দেহ। এত বিপ্লবের পরেও চীনের মানুষের মন খুব বদলাইয়াছে- এমন ধরিয়া লইবার কারণ নাই। 

বর্তমানে চীনদেশ অনেক আর্থিক উন্নতি করিয়াছে। রাষ্ট্র পরিচয়েও তাহার অনেক ক্ষমতা বাড়িয়াছে। কিন্তু সমাজের ভিতরের বা অন্তরঙ্গ জীবনের ছবি এখনো খুব বদলায় নাই। এ কথা আমি একদিন শুনিলাম কয়েক বছর আগে রেকর্ড করা একজন চীনা বুদ্ধিজীবীর বক্তৃতায়। ঘটনাচক্রে এই বুদ্ধিজীবীটি হইলেন খ্যাতনামা লেখন লু সুনের অতি নিকটাত্মীয়Ñ তাহার পৌত্র। লু সুনের নাতির মুখেই শুনিলাম, লু সুনের লেখায় যে সকল ছবির আঁকাজোকা আছে- চীনের ইতিহাসে তাহা এখনও জীবন্ত- বেশি পুরানা হইয়া যায় নাই। বিপ্লবের মধ্যস্থতায় যত দ্রুত রাষ্ট্র বদলানো যাইতে পারে তত দ্রুত সমাজের গঠন- বদলানো হয়তো যায় না। নাতির মুখে শুনিলাম- চীনের সমাজ এখনও ভিতরে বড় বিশেষ বদলায় নাই। লু সুনের লেখা তাই এখনও সমকালীন। বিশ্বাস করা সহজ নয়। কিন্তু সত্যের দায় সহজেই লইবেন। 

‘কং ইয়িজি’ নামে যে একটি গতানুগতিক বুদ্ধিজীবীর ছবি তিনি আঁকিয়াছিলেন সেই বুদ্ধিজীবীটি চীনের কেন্দ্রীয়, কি প্রাদেশিক, কি স্থানীয় কোন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় পাশ করিতে না পারিয়ায় লোকের পুঁথি ও পান্ডুলিপি নকল করিয়া জীবিকা নির্বাহ করিতেন। কিন্তু তাঁহার দুইটি বড় দোষ ছিল। তিনি একটু অলস প্রকৃতির ছিলেন আর সামান্য পান না করিলে তাহার দিন কাটিত না। লোকে তাঁহাকে কাজে নিযুক্ত করিলেও তিনি হঠাৎ হঠাৎ উধাও হইয়া যাইতেন। এই কারণে লোকে আর তাঁহাকে কাজ দিত না। বুদ্ধিজীবী হইবার কারণে তিনি কাগজ কলম দোয়াত-কালি বা দুইটা বই নিজের মনে করিয়া লইতেন। 

এই কারণে দারিদ্র তাঁহার সহজাত ব্যাধির মতো হইয়া দাঁড়ায়। তাঁহার গায়ের লম্বা কুর্তাটি হয়তো গত দশ বছর ধরিয়া ধোপায় দেওয়া হয় নাই। কোথায়ও কোথায়ও ছিঁড়িয়া গিয়াছে। তিনি পকেটে সামান্য পয়সা জমিলেই সরাইখানা বা পানশালায় ছুটিয়া যাইতেন। অল্প পয়সায় শ্রমজীবীদের কাতারে দাঁড়াইয়া পানকর্মটি করিতেন। সকলেই তাঁহাকে ঠাট্টা ও বিদ্রুপ বানে জর্জরিত করিত। পয়সার অভাবে তিনি অন্দরে বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে বসিতে পারিতেন না। বাহিরে আবার শ্রমজীবীরাও তাঁহাকে উপহাসের পাত্র ঠাওরাইত। তাঁহাকে একটা না একটা খোটা না দিয়া কেহ কথা বলিত না। 

একবার হয়তো কোথাও তিনি পা ভাঙ্গিয়া বসিলেন। তাঁহাকে একটা মাদুরের উপরে বসিয়া কাঁধে দড়ি টাঙ্গাইয়া হাতে ভর দিয়া চলিতে হইত। লোকে বলিত চুরি করিতে গিয়া ধরা পড়িয়াছে আর পিটাইয়া লোকে তাহার পা ভাঙ্গিয়া দিয়াছে। এই ঠাট্টায় শুধু শ্রমজীবীরা নহে, পানশালার মালিকটিও যোগ দিত। বলিত, ‘তুমি নিশ্চয়ই চুরি করিয়াছ। নহিলে তোমার পা ভাঙ্গিল কেন?’ নীরব বেদনায় বেচারার প্রস্থান বিনে গতি ছিল না।  

লু সুন দেখাইয়াছেন, প্রাচীন বিদ্যার সহিত একটা নিবিড় অনুরাগের সম্পর্ক ছিল কং ইয়িজির। এই নামটা তাঁহার পৈতৃক উত্তরাধিকার নহে। লোকে ব্যঙ্গ করিয়া বলিত ‘কং’ ‘ইয়ি’ ‘জি’। এই তিনটি শব্দ চীনা ভাষায় বর্ণ পরিচয়ের প্রথম তিন অক্ষর বিশেষ। বাংলায় যদি কাহারও নাম ‘ক খ গ’ রাখা হয় তেমন। ‘কং ইয়িজি’ শিশু-কিশোরদের যেখানেই পাইতেন- যেমন পানশালার ঐ ছোট্ট কিশোর কর্মীটিকে- অক্ষরজ্ঞান দেওয়ার চেষ্টা করিতেন। দুঃখের মধ্যে, বালক-বালিকারাও তাহার ভালোবাসার কদর করিত না।

তিনি ছিলেন চীনা সমাজের প্রাচীন বুদ্ধিজীবীদের শেষ প্রতিভূ। মাঝে মধ্যে দোকানে তাঁহার বাকি পড়িত। তিনি মাসের মধ্যে শোধও করিয়া দিতেন। শেষ পর্যন্ত সেই দোকানের উনিশ পয়সা বাকি তিনি শোধ করিতে পারেন নাই। একদিন চিরতরে কোথাও তিনি হারাইয়া গেলেন। কং ইয়িজির গল্প আমি কতবার পড়িয়াছি হিশাব নাই। আমার শুকনা চোখ শুকায়। 

পানশালার ছোট্ট কর্মচারী শিশুটিও তাহাকে অবজ্ঞা-অবহেলা করিয়াছিল। তিনি হইয়াছিলেন সকল লোকের মজা করিবার উপলক্ষ। একবার শ্রমজীবীরা অপবাদ দিয়াছিল- ‘তুমি কি আবারও চুরি করিতে শুরু করিয়াছ?’ তিনি বলিলেন, ‘একজন নিরপরাধ মানুষের নামে আপনারা কেন অকারণে অপবাদ দিতেছেন?’ তাহাদের চৈতন্যোদয় হইল না। দুই আঁচড়ে এমন ছবি লু সুন আঁকিলেন। শ্রমজীবীরাও ভয়ানক নিষ্ঠুর।

আরেকজন বলিল,  ‘সেদিন না তুমি হো সাহেবদের বাড়িতে বই চুরি করিতে গিয়া ধরা পড়িয়াছ?’ উনি বুদ্ধিজীবীসুলভ ভাষায় জবাব দিয়াছিলেন, ‘বইপত্র বুদ্ধিজীবীদের জিনিশ- বই নেওয়াকে তো চুরি বলা যায় না।’ তিনি গম্ভীর সংস্কৃত ভাষায় কথা বলিতেন। লোকে হাসিত- তবু তিনি শোনাইতেন এহেন আপ্তবাক্য : ‘বুদ্ধিজীবীর স্বভাব অভাবেও নষ্ট হয় না।’ 

আমাদের দেশের ভাষায় বলে, ‘দুই চারি লাথিতে ভদ্রলোকের ইজ্জত যায় না।’ বুদ্ধিজীবী আর কাহাকে বলে? আমার প্রশ্নের উত্তর জানিতেন আহমদ ছফা। আর এখন কেহ ইচ্ছা করিলে সাখাওয়াত টিপুকে জিজ্ঞাসা করিতে পারেন। তাঁহার বহির নাম ‘বুদ্ধিজীবী দেখ সবে’। মারহাবা!! 


দোহাই 

১. Lu Xun, The Real Story of AH-Q and Other Tales of China: The Complete fictional Lu Xun, trans. Julia Lovell (London: Penguin Books, 2004)

২. Lu Xun, Selected Works, Vol 1. trans. Yang xiani and Gladys yang, 2nd Ed. (Beijing: Foreign Languages Press, 1980)

৩. বুদ্ধিজীবী দেখ সবে- সাখাওয়াত টিপু, প্রকাশকাল:  ফেব্রুয়ারি ২০০৯, প্রকাশক: অনঘ, ঢাকা।


সলিমুল্লাহ খান, অধ্যাপক, ইউনিভার্সিটি অফ লিবারেল আর্টস

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //