করোনাভাইরাসের মধ্যেই ডেঙ্গু আতঙ্ক

সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে

চলমান করোনাভাইরাস আতঙ্কে জনজীবন বিপর্যস্ত। চিকিৎসা সংকটে ধুঁকছে দেশ। এ অবস্থায় নতুন করে যুক্ত হতে যাচ্ছে ডেঙ্গু এবং চিকুনগুনিয়া নিয়ে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা। আইইডিসিআর এবং বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন সংবাদ সম্মেলনে ইতোমধ্যে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা নিয়ে উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছেন। বিভিন্ন পরিসংখ্যানেও দেখা যাচ্ছে, গত বছর জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তিন মাসে আক্রান্ত হয়েছিল ৭৩ জন; কিন্তু চলতি বছর একই সময়ে আক্রান্ত হয়েছে ২৬৫ জন। যা প্রায় চার গুণ বেশি।

সিটি করপোরেশনগুলো যথাসময়ে ওষুধ ছিটালে মশার বিস্তার কমে; কিন্তু প্রয়োজনীয় বাজেট থাকার পরও বরাবরের মতোই আমাদের মেয়র বা কমিশনাররা এ ব্যাপারে উদাসীনতা দেখিয়ে চলেছেন। গত বছর বেসরকারি হিসাবে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসকসহ প্রায় ৩০০ ব্যক্তির মৃত্যুর খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল। করোনাভাইরাস নিয়ে উদ্ভূত বর্তমান পরিস্থিতিতে মশার ওষুধ ছিটানো বন্ধপ্রায়। ফলে এ বছর যদি ডেঙ্গু বড় আকারে ছড়িয়ে পড়ে, তা হবে খুবই ভয়াবহ।

সরকারি ছুটি ঘোষণার পর থেকে রাজধানীর বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান বন্ধ; কিন্তু বৃষ্টি হওয়ার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ এসব প্রতিষ্ঠানসহ ও নির্মাণাধীন ভবনের বিভিন্ন স্থানে পানি জমে ডেঙ্গু মশার লার্ভা জন্ম নেয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তা ছাড়া বিগত এক বছর ধরে সিটি করপোরেশন এবং ওয়াসাসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে সড়ক খোঁড়াখুঁড়ির যে তাণ্ডব চলেছে, তা এখন ডেঙ্গু পরিস্থিতি সৃষ্টির প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজধানীর এমন কোনো এলাকা নেই, যেখানে রাস্তা খোঁড়া হয়নি। আর এসব খোঁড়াখুঁড়ির জায়গায় জমে থাকা পানি এডিস মশার প্রজনন ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। নির্মাণাধীন ভবনের লিফটের গর্ত, বাস টার্মিনালগুলোতে পড়ে থাকা টায়ারেও পানি জমে পরবর্তী সময়ে এডিস মশার জন্ম হতে পারে। এসব স্থানে সিটি করপোরেশনকে কাজ করতে হবে। গত বছর গ্রামগুলোতেও আমরা ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়তে দেখেছি। তাই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে উদ্যোগ নিতে হবে।

মহানগরের বিভিন্ন স্থান জীবাণুমুক্ত করার পাশাপাশি মশকনিধনের কার্যক্রম আরো জোরদার করার বিকল্প নেই। মশকনিধন এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সব সিটি করপোরেশন, ঢাকা ওয়াসা ইত্যাদিকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। এই সংকটময় সময়ে নগরবাসীর সুরক্ষা, বিশেষ করে মশক নিধন কার্যক্রমের দায়িত্ব সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষেরই। তাদেরই সঠিকভাবে এ দায়িত্ব পালন করতে হবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //