নতুন বছর গণতন্ত্রের পথ মসৃণ হোক

২০১৯ সাল পেরিয়ে নতুন আরেকটি বছরে আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছে। কিন্তু এখনই শেষ হয়ে যায়নি চলে যাওয়া বছরের সব হিসাব-নিকাশ। সামনের দিনগুলোতে এগোতে পেছন ফিরে একবার মিলিয়ে নেওয়া দরকার আমাদের প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির সমীকরণটিকে।

রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বেশ ঘটনাবহুল ছিল গত বছরটি। অনেক চ্যালেঞ্জ এসেছে, ঘটেছে উত্থান-পতনের নানা ঘটনা। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেলসহ মেগা প্রকল্পগুলোর কাজে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি, দুর্নীতি ও ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান, প্রত্যাশিত সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়ন প্রভৃতি ক্ষেত্রে যেমন সাফল্য যোগ হয়েছে, তেমনি ব্যর্থতাও কম নয়। নতুন আইন করেও শৃঙ্খলা ফেরেনি সড়কে। অর্থনীতির গতিও অনেকটাই থমকে ছিল। খেলাপি ঋণ, পুঁজিবাজারের পতন এরকম নেতিবাচক সংবাদগুলো শিরোনাম হয়েছে বারবার।

দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে অভ্যন্তরীণ কোন্দল, সাংগঠনিক দুর্বলতা, মতবিরোধসহ বিভিন্ন কারণে সারাবছরেও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। এমনকি বিএনপি তাদের নেত্রীর মুক্তির দাবিতে জোরদার আন্দোলনও গড়ে তুলতে পারেনি।

বছরজুড়েই বাজার ভুগিয়েছে ভোক্তাদের। শুধু পেঁয়াজ নয়, প্রতিটি নিত্যপণ্যের দাম ছিল ঊর্ধ্বমুখী, যা সীমিত আয়ের মানুষের জীবনযাত্রাকে দুর্বিষহ করেছে। তাছাড়া রাজধানীসহ সারাদেশে ডেঙ্গু রোগ গত বছর প্রায় মহামারি আকার ধারণ করেছিলো, যা সামাল দিতে হিমশিম খান দায়িত্বপ্রাপ্তরা।

গত বছর উচ্চ শিক্ষায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের দুর্নীতি-অনিয়মবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শিক্ষক ও ছাত্র রাজনীতির নোংরা দিক যেমন উঠে এসেছে, তেমনি শুভবোধসম্পন্ন নতুন এক সংঘবদ্ধ শক্তির উত্থানও সুস্পষ্ট হয়েছে। তবে দীর্ঘ সময় পর এ বছর ২ হাজার ৭৩৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তি সর্বমহলের প্রশংসা কুড়িয়েছে। যদিও বছরের শেষপ্রান্তে এসে রাজাকারের তালিকা প্রণয়নে অদক্ষতা ও অস্বচ্ছতার পরিচয় দিয়ে সমালোচিত হয়েছে সরকার।

সাম্প্রতিক সময়ে সারাবিশ্বের অন্যতম প্রধান সমস্যা, গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিকতা না-পাওয়ার হাহাকার ও ক্ষোভ। এ তালিকায় আছে আধুনিক গণতান্ত্রিক দেশের অন্যতম দাবিদার যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, এমনকি ভারতের নামও। আমাদের দেশের গণতন্ত্রও বরাবর অমসৃণ পথে হেঁটেছে। তারপরও আমাদের প্রত্যাশা নতুন বছর আমাদের সব অধিকার সুনিশ্চিত হবে, ব্যবসায়ীদের অনুকূল পরিবেশে ব্যবসা, পেশাজীবীদের নির্ঝঞ্ঝাটভাবে কর্মে ব্যতিব্যস্ত থাকা আর নিরাপদে ঘরে ফেরা ইত্যাদি মিলিয়ে ২০২০ সালে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে তার লক্ষ্যে।

সম্পাদকীয়
সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //