কোন পথে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়?

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে যে কোনো নেতিবাচক সংবাদ আমাকে কষ্ট দেয়। গত ১২-১৩ বছর ধরে জাহাঙ্গীরনগর নিয়ে একের পর এক নেতিবাচক সংবাদের জন্ম হচ্ছে। একাধিক উপাচার্য আন্দোলনের মধ্য দিয়ে অপসারিত হয়েছেন।

বিএনপির শাসনামলে যারা উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, তাদের একজন অপসারিত হয়েছিলেন বিএনপিপন্থী একদল শিক্ষকের আন্দোলনের মুখে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আছে ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে।

এই সরকারের আমলে প্রথমদিকে জাহাঙ্গীরনগর প্রথম একজন উপাচার্য পায়, যিনি এ বিশ্ববিদ্যালয়েরই ছাত্র। তিনি অপসারিত হন আন্দোলনের মুখে। সেদিন তার কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়েছিল (মে ২০১২) এই ক্যাম্পাসেই। আর যিনি ওই কুশপুত্তলিকা দাহ করেছিলেন, তিনি বিএনপিপন্থী কোনো শিক্ষক ছিলেন না।

এরপর যিনি এলেন, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন, দায়িত্ব পালন করেছেন ২০১২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত। বিতর্কিত অনেক বক্তব্যের জন্য তিনি সমালোচিত হয়েছিলেন বেশি। হিন্দু শিক্ষার্থীদের তিনি ‘হিন্দু রাজাকার’ বলে শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে পড়েছিলেন। একপর্যায়ে আন্দোলনের মুখে তিনিও অপসারিত হন।

এরপর ২০১৪ সালে দায়িত্ব নেন বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। এখন অব্দি তিনি ক্ষমতায় আছেন। প্রথম নারী উপাচার্য হিসেবে তিনি সর্বমহলে অভিনন্দিত হলেও তার নিয়োগে সবাই সেদিন অবাক হয়েছিলেন। কেননা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাজনীতিতে তার আদৌ কোনো অবদান ছিল না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো পদে তিনি কোনোদিন নির্বাচন করেননি, ডিন কিংবা সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে তার কোনো প্রশাসনিক অভিজ্ঞতাও ছিল না। যতদূর মনে পড়ে তিনি বিভাগের সভাপতিও ছিলেন না। কিন্তু তার আমলে বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্থিক কেলেঙ্কারির যে জন্ম হল, অতীতে কখনও এমনটি হয়নি।

বিএনপির শাসনামলে যারা ছিলেন, কিংবা ২০০৯ সালের পর থেকে যে দু’জন উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে ‘অন্যান্য’ অভিযোগ থাকলেও আর্থিক দুর্নীতি কিংবা আর্থিক কেলেঙ্কারির কোনো অভিযোগ ওঠেনি। এমনকি সাবেক উপাচার্যের স্ত্রী কিংবা সন্তানরা কোনো ধরনের আর্থিক কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত ছিলেন, এমন কোনো সংবাদও কাগজে প্রকাশিত হয়নি।

কিন্তু বর্তমান উপাচার্যের স্বামী ও সন্তানের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে প্রকাশ্যে। আর অভিযোগ যারা এনেছেন, তারা সবাই সরকারি দলের সহযোগী ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা ও কর্মী। সব অভিযোগই উপাচার্য অস্বীকার করেছেন।

উপাচার্যের কাছে চাঁদা দাবি করার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। কিন্তু এর রেশ এখনও রয়ে গেছে। চাঁদা দেয়ার প্রেক্ষাপটটি রচিত হয়েছিল ক’দিন আগে।

জাবির উন্নয়ন কাজের জন্য ১ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকার মাঝে প্রথম পর্যায়ে বরাদ্দ হয়েছিল ৪৫০ কোটি টাকা। জাহাঙ্গীরনগরে তৈরি হবে পাঁচটি ছাত্রাবাস। কিন্তু গোল বাধে দুটি সংবাদে।

প্রথমটিতে বলা হয়, ছাত্রাবাস নির্মাণ করতে গিয়ে ঠিকাদাররা ইতিমধ্যে ৫০০ গাছ কেটে ফেলেছেন। আর দ্বিতীয় সংবাদটি ছিল আরও ভয়াবহ- ঠিকাদারদের ‘কাজ’ নিশ্চিত করতে ছাত্রলীগকে দুই কোটি টাকা দেয়া হয়েছে।

অভিযোগ, খোদ উপাচার্য ও তার পরিবারের সদস্যরা নাকি তার নিজের বাসায় মিটিং করে ছাত্রলীগের নেতা ও কর্মীদের মাঝে এই টাকা ভাগ করে দিয়েছেন। এর পেছনে সত্যতা কতটুকু আছে জানি না। কিন্তু একাধিক সংবাদপত্রে এ খবর ছাপা হয়েছে।

বাস্তবতা হচ্ছে, এ ধরনের টাকা ভাগাভাগির সঙ্গে দুর্নীতির প্রশ্ন যেহেতু জড়িত, সেহেতু কেউই এটা স্বীকার করে না। উপাচার্য ও ঠিকাদাররাও এটা স্বীকার করেননি। তবে উপাচার্য এটা স্বীকার করেছেন যে, তার বাসায় তিনি ছাত্রলীগের নেতাদের নিয়ে মিটিং করেছিলেন।

তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক। ছাত্র সংগঠনের নেতাদের নিয়ে তিনি মিটিং করতেই পারেন। কিন্তু টাকা ভাগাভাগির বিষয়টি যখন ওঠে, তখন তার ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয় বৈকি। যারা টাকা নিয়েছেন, তারা প্রকাশ্যেই বলেছেন সে কথা। উপাচার্য তাদের টাকাটা দিয়েছেন, এ কথাও তারা বলেছেন।

আমার দুঃখ লাগে তখনই, যখন দেখি ছাত্ররা কেটে ফেলা গাছে কাফনের কাপড় জড়িয়ে ক্যাম্পাসে ‘শবযাত্রা’ করেছিল। রাতের বেলা পালাগানের আয়োজন করে স্লোগান তুলছিল ‘জাবিতে নাকি টাকার বাগান রয়েছে’। একটা ব্যানারও দেখলাম। তাতে লেখা ‘স্বৈরাচার্যের মাস্টার প্লানচ্যাট’! উপাচার্য আর স্বৈরাচার- দুটোকে এক করে ছাত্ররা শব্দ বানিয়েছে ‘স্বৈরাচার্য’।

কী লজ্জার কথা! একজন উপাচার্য স্বৈরাচার হবেন কেন? এ জন্যই কি বিশ্ববিদ্যালয়! আমার দুঃখ লাগে- এই বিশ্ববিদ্যালয়েই আমি আমার শ্রেষ্ঠ সময়গুলো পার করেছি। কী বিশ্ববিদ্যলয় রেখে যাচ্ছি আমরা!

সরকারকে ধন্যবাদ দিতেই হয়, ছাত্রছাত্রীদের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে ‘অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পে’ ১ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। কিন্তু এ টাকা নিয়ে ‘নয়ছয়’ হবে, তা কাম্য নয়। উপাচার্য তার দায় এড়াতে পারেন না। শিক্ষকতা জীবনে অনেকদিন তো পার করলাম। কিন্তু বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে আর উপাচার্যদের সম্পর্কে নানা কাহিনী যখন কাগজে ছাপা হয়, তখন শিক্ষক হিসেবে আমাদের মানমর্যাদা আর থাকে না।

একজন উপাচার্যের কাহিনী কাগজে ছাপা হয়েছিল, তিনি প্লেনে এসে সকাল-বিকাল অফিস করেন, মাসের বেশিরভাগ সময় ঢাকায়ই থাকেন! আরেকজন উপাচার্য নারী কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছিলেন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল অবৈধ সন্তানের পিতৃত্বের! দেশে প্রায় ৪৫টি বিশ্ববিদ্যালয় সরকারি।

হেন কোনো উপাচার্য নেই, যার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠেনি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্যের বিরুদ্ধে এর আগেও অভিযোগ এনেছিলেন তার সহকর্মীরাই। যারা অভিযোগ এনেছিলেন তারা বঙ্গবন্ধুর অনুসারী ও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সমর্থক।

সম্প্রতি তারা আবারও একটি সংবাদ সম্মেলন করেছেন, আর তা ছাপাও হয়েছে সংবাদপত্রে। শিক্ষকরা প্রথম পর্যায়ের ৪৫০ কোটি টাকার প্রকল্পে দুর্নীতি আর আত্মীয়করণের অভিযোগ তুলে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছেন।

অভিযোগটি গুরুতর, সন্দেহ নেই তাতে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় কিংবা ইউজিসি অভিযোগটি কতটুকু গুরুত্বের সঙ্গে নেবে, আমি নিশ্চিত করে তা বলতে পারব না। কিন্তু দুর্নীতির ক্ষেত্রে কোনো বাছবিচার করা ঠিক নয়। শিক্ষকও যদি দুর্নীতি করেন, তাকেও সবার মতো আইনের আওতায় আনতে হবে। সংবিধান আমাদের সমদৃষ্টিতে দেখেছে। অর্থাৎ আইনের চোখে সবাই সমান।

একজন ডিআইজি মিজান যদি দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে কারাবরণ করতে পারেন, একজন জেলার পার্থের কাছে যদি অবৈধভাবে অর্জিত ৭০ লাখ টাকা পাওয়া যায় এবং তাকে গ্রেফতার করা হয়, তাহলে জাহাঙ্গীরনগরের ৪৫০ কোটি টাকার প্রকল্পে যদি আদৌ কোনো দুর্নীতি হয়ে থাকে, তার বিচার হবে না কেন?

আমি বিশ্বাস রাখতে চাই, এ ঘটনায় উপাচার্য নির্দোষ। তার নিজের সম্মান ও উপাচার্যের পদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে সাময়িকভাবে তিনি উপাচার্য পদ থেকে অব্যাহতি নিতে পারেন। কারণ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ইউজিসি। তবে এ তদন্ত কমিটির ওপর আমি আস্থা রাখতে পারছি না। কেননা একাধিক উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেও একটি ক্ষেত্রেও ইউজিসি কারও বিরুদ্ধে শাস্তির কোনো সুপারিশ করেনি।

আমার মনে আছে, রংপুরের রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক দু’জন উপাচার্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় দুদক তাদের চিঠি দিয়ে ডেকেছিল। দুদকের ওই সিদ্ধান্ত প্রশংসিত হয়েছিল। শিক্ষকরাও যে ‘ধোয়া তুলসী পাতা’ নন, তা দুদকের নোটিশ পাওয়ার পর প্রমাণিত হয়েছিল।

পাঠক স্মরণ করতে পারেন, রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ওই উপাচার্যের একজন সেখানে নিয়োগ বাণিজ্য করেছিলেন। অপর একজন প্রতিদিন ৭ হাজার টাকা করে নাশতার বিল করে ও তা উত্তোলন করে সংবাদ হয়েছিলেন। আজ জাহাঙ্গীরনগরে ২ কোটি টাকা ভাগবাটোয়ারার অভিযোগ উঠেছে।

এর সঙ্গে ভিসির সম্পৃক্ততার অভিযোগ এনেছেন স্বয়ং শিক্ষকরা। একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হলেও তাতে দুর্নীতির পুরো চিত্র পাওয়া নাও যেতে পারে। তাই বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা জরুরি।

গাছ কাটার অভিযোগ তো প্রমাণিত। উপাচার্য এর দায় এড়াবেন কীভাবে? বিশ্বব্যাপী গাছ লাগানোর ব্যাপারে যে সচেতনতা সৃষ্টি হয়েছে, সে ব্যাপারে কি উপাচার্য অবগত নন? পরিবেশ রক্ষায় গাছের প্রয়োজন অনেক বেশি। বৈশ্বিক উষ্ণতা রোধে গাছের কোনো বিকল্প নেই। গাছ লাগানোর ব্যাপারে যে সচেতনতা সৃষ্টি হয়েছে, তার কয়েকটি দৃষ্টান্ত দেয়া যেতে পারে।

নিউজিল্যান্ড সরকার ১০০ কোটি গাছ লাগানোর পরিকল্পনা করছে পরিবেশ রক্ষার জন্য (Educate Inspire Change, ১৯ আগস্ট ২০১৯)। দেশটি ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে চায়। এ জন্যই গাছ লাগানোর এই পরিকল্পনা। ফিলিপাইন নতুন একটি আইন প্রণয়ন করেছে, যাতে একজন শিক্ষার্থী ১০টি গাছ না লাগালে তাকে গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি দেয়া যাবে না। ইতিমধ্যে আইনটি ফিলিপাইনের আইনসভায় পাসও হয়েছে (Insider, 29 মে ২০১৯)।

ভারতের দৃষ্টান্ত দেই। উষ্ণতা রোধে উত্তর প্রদেশ রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে স্কুল শিক্ষার্থীরাসহ সবাই একদিনে ২২ কোটি গাছ লাগিয়েছে। অর্থাৎ উত্তর প্রদেশের মোট বাসিন্দা ২২ কোটি। সবাই একটি করে গাছ লাগিয়েছেন ১৪ লাখ ৩০ হাজার ৩৮১টি জায়গায়, যার মধ্যে আছে ৬০ হাজার গ্রাম আর ৮৩ হাজার জঙ্গলের চিহ্নিত এলাকা।

এই তথ্যটি দিয়েছেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ (USA Today, 9 আগস্ট ২০১৯)। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবাইকে তিনটি করে গাছ লাগানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন। আর আমরা কিনা ৫০০ গাছ কেটে ফেললাম! এই একটি ‘কাজের’ জন্যও তো ভিসি অভিযুক্ত হতে পারেন।

তবে নিঃসন্দেহে দুর্নীতির অভিযোগটি বড়। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন অভিযোগ করেছেন, সিডিউল ছিনতাই থেকে শুরু করে প্রকল্পের দুর্নীতি- সবখানে উপাচার্যের ছেলে ও স্বামী সরাসরি জড়িত (বার্তা ২৪, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯), সেখানে গোয়েন্দা সংস্থা বিষয়টি বিবেচনায় নিতে পারে।

ইউজিসির তদন্ত কমিটিরও উচিত হবে এ অভিযোগটি ‘বিবেচনায়’ নেয়া। তারা প্রয়োজনে সাদ্দাম হোসাইনের সঙ্গে কথাও বলতে পারেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘জাহাঙ্গীরনগরের ঘটনা অন্য বিশ্ববিদ্যালয়েও হচ্ছে’ (বিডিনিউজ ২৪, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯)।

একজন সাবেক উপাচার্য যখন এ ধরনের কথা বলেন, তখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উন্নয়নের নামে যে শত শত কোটি টাকা বরাদ্দ হয়, তা নিয়ে ভাবতে হবে। কীভাবে এ উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় জবাবদিহিতা আনা যায়, তা নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে ভাবতে হবে।

জাহাঙ্গীরনগরের এই দুর্নীতি নিয়ে যখন জাবি ছাত্রলীগের সহসভাপতি নিয়ামুল হাসান তাজ নিজে স্বীকার করেন ‘২৫ লাখ টাকা ঈদ সালামি পেয়েছি’ (যুগান্তর, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯), তখন বর্তমান ছাত্র নেতৃত্ব তথা আগামী দিনের নেতৃত্ব নিয়ে আমি শঙ্কিত। কেমন নেতৃত্ব আমরা পেতে যাচ্ছি আগামী দিনে? যে ছাত্রনেতা ‘ক্যাম্পাস রাজনীতি’ করে ঈদ সালামি পান ২৫ লাখ টাকা, তাকে অথবা তাদেরকে জাতীয় পর্যায়ে নেতৃত্বে আনা ‘হিতে বিপরীত’ হতে পারে। এই নেতৃত্ব আমরা চাই না।

অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের জন্য আমার দুঃখ হয়। প্রধানমন্ত্রী তাকে যে সুযোগটি দিয়েছিলেন, তিনি সেই সুযোগটি কাজে লাগাতে পারলেন না। একজন নারী উপাচার্য হিসেবে তিনি একটি দৃষ্টান্ত রাখতে পারতেন। কিন্তু দুর্নীতির যে অভিযোগে তিনি ‘অভিযুক্ত’ হলেন, তা আগামী দিনে সমাজে তার অবস্থানকে আরও উচ্চতায় নিয়ে যাবে না।

জাহাঙ্গীরনগর বারবার উপাচার্যদের দ্বারা কলঙ্কিত হচ্ছে। কলঙ্কের অভিযোগ নিয়ে আবারও কি একজন উপাচার্যের ‘বিদায়ের’ পথ প্রশস্ত হচ্ছে, সেটাই বড় প্রশ্ন এখন।

লেখক: তারেক শামসুর রেহমান।
প্রফেসর ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক
[email protected]


সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //