নুনের গুণ

খাবার পাতে হোক বা রান্নায় নুন বা লবণ খাবারের স্বাদ বদলে দেয়। এটি বেশি খাওয়া যেমন শরীরের জন্য খারাপ, তেমনি একদম না খেলেও ক্ষতি। লিভার, কিডনি, হার্টের মতো শরীরের কিছু গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের কার্যকলাপ লবণের ওপর নির্ভর করে। বিশ্বে বেশ কয়েক ধরনের লবণ পাওয়া যায়। একেক লবণের একেক ধরনের গুণাবলি রয়েছে, যা আমাদের দেহের জন্য উপকারী। 

সামুদ্রিক লবণ: সমুদ্র থেকে পানি উঠিয়ে রোদে শুকিয়ে সি সল্ট বা সামুদ্রিক লবণ বানানো হয়। সামুদ্রিক লবণ স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এই লবণ শরীরে দ্রবীভূত হয় অন্য যে কোনো লবণের চেয়ে দ্রুত। এটি একটি অপরিশুদ্ধ, অপ্রক্রিয়াজাতকৃত লবণ। এর গন্ধও অনন্য। 

পরিশোধিত আয়োডিন লবণ: সমুদ্রের পানিকে বাষ্পীভূত করার পর তা পরিশোধন করে তাতে আয়োডিন মিশিয়ে বাজারজাত করা হয়। রান্নাবান্নায় স্বাদ ও আয়োডিনের ঘাটতি পূরণের জন্য এ লবণ ব্যবহার করা হয়। বাজারে এর চাহিদা সবচেয়ে বেশি। থাইরয়েড বা কণ্ঠনালি সম্পৃক্ত রোগ নিরাময়ের পাশাপাশি বুদ্ধিবৃত্তিক ও দৈহিক উন্নয়নের অক্ষমতাগুলো দূর করতে এই লবণটি প্রতিষেধকস্বরূপ।

পাথুরে বা হিমালয়ের গোলাপি লবণ: ‘কালা নামাক’ নামে অপরিশোধিত লবণ পাওয়া যায় হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে। এই লবণ ব্যবহারে যা কিছুই প্রস্তুত করা হোক না কেন, তাতে এক ভিন্ন ধরনের সুগন্ধ যুক্ত হয়। হাড় শক্তিশালী করে, নিম্ন রক্তচাপ দূর হয়, মাইগ্রেইনের ব্যথা দূর করে, হজমশক্তি বাড়ায়, পেশি ব্যথারোধ করে, কোষের ভেতর এবং বাইরের পানির ভারসাম্য বজায় রাখে, শরীরে পানির পরিমাণ ঠিক রাখে এবং ওজন হ্রাসে সাহায্য করে। 

রক সল্ট বা সৈন্ধব লবণ: যাদের সাধারণ লবণ খাওয়া বারণ তাদের জন্য রঙিন চকচকে পাথরের মতো দেখতে রক সল্ট বা সৈন্ধব লবণ বেশ উপকারী। নীল, গোলাপি, বেগুনি, কমলা, হলুদ বিভিন্ন রঙের সৈন্ধব লবণ বাজারে পাওয়া যায়। এই লবণ রোগ প্রতিরোধ বাড়ায়, ঠাণ্ডা-জ্বর, ফ্লু, অ্যালার্জির প্রকোপ থেকে দূরে রাখে, দেহের ওজন কমায়, খাবার হজমে সাহায্য করে। 

বিট লবণ: যার আরেক নাম সুলেমানি লবণ। এটি এক প্রকারের খনিজ লবণ। সাধারণত বিট লবণ বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান নেপালের কাছাকাছি হিমালয় লবণ সমৃদ্ধ এলাকায় মাটির নিচ থেকে পাথর আকারে উত্তোলন করা হয়। কড়া গন্ধের এই লবণ শরীরের গাঁটে ব্যথা, ডায়বেটিস, ফুসফুস ও হৃৎপিণ্ডজনিত সমস্যাগুলোর উপশম ঘটায়। এ ছাড়াও খিদে আনে, বিষুণ্ণতা দূর করে। বিট লবণ খেলে নানাবিধ রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারি। 

রসুন বা সেলারি লবণ: এই সুগন্ধি লবণ তৈরি হয় টেবিল, পাথুরে বা সামুদ্রিক লবণের সঙ্গে শুকনো রসুন বা সেলারি নামের বিশেষ সুগন্ধিযুক্ত গাছের পাতার মিশ্রণে। তরকারিতে বিশেষ স্বাদ যুক্ত করতে এর জুড়িমেলা ভার।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //