নতুন পাঠক্রম শুরুর দিনক্ষণ পেছালো

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে নতুন কারিকুলামে পাঠদান এক বছর পেছানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে নতুন কারিকুলামে পাঠদান শুরু কথা ছিল। নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী বইও দেয়া হচ্ছে না। 

গতকাল মঙ্গলবার (২ জুন) রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এক সভায় ২০২১ সালে প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত নতুন কারিকুলামে শিক্ষাক্রম চালুর পূর্ব নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে করণীয় নির্ধারণে এই সিদ্ধান্ত হয়।

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী সভায় উপস্থিত ছিলেন।

সভায় উপস্থিত জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, করোনারভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতে আগামী বছর নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। ২০২২ সাল থেকে নতুন কারিকুলাম পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা হবে।

তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে শিক্ষাক্রম তৈরির কাজটি করা যাচ্ছে না। এছাড়া এখন শিক্ষাক্রমের ভিত্তিতে পাণ্ডুলিপি তৈরি করে ছাপানোও কঠিন হবে। সার্বিক দিক বিবেচনায় তারা আগামী বছর থেকে নতুন শিক্ষাক্রমে বই না দেয়ার প্রস্তাব করলে সেটি গ্রহণ করা হয়েছে। ফলে আগামী বছরও বিদ্যমান শিক্ষাক্রম অনুযায়ী বই পাবে শিক্ষার্থীরা।

তবে নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে শিক্ষক নির্দেশিকা দেয়া হবে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, এর মাধ্যমে তারা নতুন কারিকুলাম সম্পর্কে আগে থেকেই ধারণা পাবেন।

২০২১ সাল থেকে নতুন কারিকুলামে প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান শুরুর কথা ছিল। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে গত ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তা আর সম্ভব নয় বলে সভায় বেশিরভাগ কর্মকর্তা মতামত তুলে ধরেন।

তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা না রাখা, নবম-দশম শ্রেণিতে বিভাগ না রাখাসহ বেশ কিছু নতুন বিষয় যুক্ত করে নতুন কারিকুলাম প্রণয়নের কথা রয়েছে। কভিড-১৯ সংক্রমণ পরিস্থিতি সংসদ টিভির মাধ্যমে ক্লাসগুলো কীভাবে আরো কার্যকর করা যায়, সে বিষয়েও সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

সরকার প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি (উচ্চমাধ্যমিক) পর্যন্ত শিক্ষাক্রম পরিবর্তনের কাজ শুরু করেছে। পরিমার্জিত এই শিক্ষাক্রম হবে যোগ্যতা ও দক্ষতাভিত্তিক। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সূক্ষ্ম চিন্তা, সৃজনশীল চিন্তাসহ ১০ ধরনের মূল দক্ষতা শেখানো হবে। এর সাথে মিল রেখে ভাষা, গণিত, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, জীবন-জীবিকাসহ ১০টি বিষয় শেখানোর মধ্য দিয়ে একজন শিক্ষার্থীকে যোগ্য করে তোলা হবে।

সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে ২০২১ সাল থেকে প্রাথমিক স্তরের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি এবং মাধ্যমিকের ষষ্ঠ শ্রেণির বই দেয়ার কথা ছিল। এরপর ২০২২ সালে প্রাথমিকের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি এবং মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের সপ্তম, নবম ও একাদশ শ্রেণির বই দেয়ার কথা ছিল। 

আর ২০২৩ সালে পঞ্চম, অষ্টম, দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির বই দেয়ার কথা ছিল। এখন আর আগামী বছর নতুন শিক্ষাক্রমে বই দেয়া হচ্ছে না।

প্রস্তাবিত শিক্ষাক্রম অনুযায়ী, মাধ্যমিক স্তর (দশম শ্রেণি) পর্যন্ত সব শিক্ষার্থীকে একই ধরনের বিষয় পড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ বিষয়টি বাস্তবায়ন হলে এখনকার মতো নবম শ্রেণি থেকে একজন শিক্ষার্থীকে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষায় শাখায় ভাগ করা হবে না। এই ভাগ হবে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে গিয়ে। তবে এটি হলেও ২০২৪ সাল থেকে চালু হতে পারে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //