বিষ ও সারমুক্ত সবজি চাষে সফল রফিকুল

ধানের ন্যায মূল্য না পেয়ে কম খরছে বেশি লাভবান হওয়ায় সবজি চাষে ঝুঁকছে হাওরাঞ্চলের কৃষকরা। আর বিষ ও সারমুক্ত সবজির প্রতি সবার আগ্রহ থাকায় সেই সুযোগটি কাজে লাগিয়েছেন অনেক কৃষক। 

এমনই একজন রফিকুল ইসলাম (৫৫)। এক সময় জীবিকার তাগিদে বাজারে লুঙ্গি, চাল বিক্রি করলেও এখন তিনি এক বারেই কৃষক। নিজের ৯০ শতাংশ জমিতে প্রতি বছর ধাপে ধাপে মরিচ, পুঁইশাক, লাউ, বাদাম, পাটসহ নানান ফসল উৎপাদন করেন। উৎপাদিত এগুলো বিক্রি করে তার সংসার জীবন চলে। এমনই জানালেন তাহিরপুর উপজেলার বাজারে পুঁইশাক বিক্রি করার সময় রফিকুর ইসলাম। 

তিনি উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের চরগাও গ্রামের ইউনুছ মিয়ার ছেলে। পরিবারের ৭ ভাই বোনের মধ্যে ৬ ভাই ১ বোন। আর ২য় রফিকুল ইসলাম। 

ছোট বেলা থেকেই সংসারের হাল ধরেছেন তিনি। করেছেন বিয়ে। পরিবারের উপার্জনশীল ব্যক্তি তিনিই। রয়েছে তার ৩ ছেলে ৩ মেয়ে। তাদের লেখাপড়া, ভরণপোষণ ও নিজের খরচ সব আসে এই সবজি বিক্রি করার টাকায়। এরমধ্যে তিনি তার এক কন্যাকে বিয়ে দিয়েছেন।

সকালে জমি থেকে সবজি তুলে নিজেই উপজেলার বিভিন্ন বাজারে বাজারে ঠেলা গাড়ি করে বিক্রি করার জন্য নিয়ে যান। আর এই বিক্রির টাকায় চলে তার সংসার চলে। 

রফিকুল ইসলাম জানান, ইরি, বোরো ধান উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত হলেও এখানকার কৃষকরা শাক-সবজির জন্য জেলার দক্ষিণাঞ্চলের উপর নির্ভরশীল ছিলো। উপজেলায় বিভিন্ন প্রকার শাক-সবজি চাষে আশানুরুপ উৎপাদন ও বিক্রি করে লাভবান হওয়ায় শাক-সবজি উৎপাদনের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন। প্রতি বছর এই গুলো উৎপাদন করলে ৫০-৬০ হাজার টাকা খরচ হয় আর বিক্রি হয় প্রায় ১ থেকে ২ লাখ টাকা। কিন্তু সড়ক পথে যাতায়াতের সুব্যবস্থা না থাকায় জেলার বিভিন্ন বাজার দর সম্পর্কে অবহিত হতে না পারায় গুটি কয়েক পাইকারদের দামের মধ্যেই তাদের সীমাবদ্ধ থাকতে হচ্ছে। তাই তিনি নিজেই ঠেলাগাড়িতে করে পাশ্ববর্তি বাদাঘাট ইউনিয়নের বাজারে শাক-সবজি বিক্রি না করে চলে এসেছেন তাহিরপুর উপজেলা সদরের পশ্চিম বাজারে। পুঁইশাক বিক্রি করছেন প্রতি কেজি ২০টাকা। টাককা শাক দেখে সবাই কিনি বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছে। 

কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, আমার জমিতে আমি নিজেই উৎপাদন করি। আবার নিজেই বিক্রি করি বিভিন্ন বাজারে গিয়ে। আর এসব উৎপাদন করতে আমি বিষ ও সার ব্যবহার করি না। যার জন্য আমার উৎপাদিত সকল প্রকার সবজি নিরাপদ। 

তাহিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান উদ-দোল্লা বলেন, আমাদের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ মাঠে গিয়ে কৃষকদের বিষ মুক্ত সবজি চাষে উদ্ভুদ্ধ করাসহ কি ভাবে সবজি চাষে করতে হবে ও পরিচর্যা করে লাভবান হবে সে সর্ম্পকে পরামর্শ দিচ্ছে। উপজেলার বাদাঘাট ও উত্তর বড়দল ইউনিয়নে এবার বেশী সবজি চাষ হয়েছে। উপজেলায় ১১শত হেক্টর লক্ষ্য মাত্র হলেও ১৫শত হেক্টর চাষ হয়েছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

বিষয় : সুনামগঞ্জ

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //