রোহিঙ্গাদের এনআইডি: গ্রেপ্তার ২ ইসি কর্মী রিমান্ডে

রোহিঙ্গাদেরকে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেয়ার ঘটনায় জড়িত নির্বাচন কমিশনের দুই কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি)। এরা হলেন চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের উচ্চমান সহকারী আবুল খায়ের ভুঁইয়া (৪৫) ও মিরসরাই উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ের অফিস সহকারী আনোয়ার হোসেন (৪৫)। মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে তাদের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার জাহানের আদালত। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) তাদেরকে নিজ নিজ কর্মস্থল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সিএমপির কাউন্টার টেররিজম ও ট্রান্সন্যাশনাল ইউনিটের (সিটিটিসি) পরিদর্শক রাজেশ বড়ুয়া জানান, এনআইডি জালিয়াতির ঘটনায় কোতোয়ালী থানায় করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে এই দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে তোলা হয়। আদালত ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত আগস্টে এক রোহিঙ্গা নারী ভুয়া এনআইডি সংগ্রহ করে চট্টগ্রামে পাসপোর্ট নিতে গিয়ে ধরা পড়ার পর জালিয়াত চক্রের খোঁজে নামে নির্বাচন কমিশন। আটকে দেয় রোহিঙ্গা সন্দেহে অর্ধশত এনআইডি বিতরণ।

এনআইডি জালিয়াতিতে সম্পৃক্ততার অভিযোগে গত ১৬ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম নির্বাচন কার্যালয়ের অফিস সহায়ক জয়নাল আবেদীন নামে একজনকে তার দুই সহযোগী ও এক ল্যাপটপসহ আটক করে পুলিশে দেয় কর্মকর্তারা।

এ ঘটনায় চট্টগ্রামের ডবলমুরিং উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা পল্লবী চাকমা বাদি হয়ে কোতোয়ারী থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্তভার পায় কাউন্টার টেররিজম ইউনিট।

জয়নালের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে মোস্তফা ফারুক নামে প্রকল্পের অধীনে কারিগরি সহায়তা কর্মীকে এবং তার দেওয়া তথ্যে আইডিইএ প্রকল্পের কারিগরি বিশেষজ্ঞ শাহনূর মিয়াকে ২৩ সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। শাহনূর দেশের বিভিন্ন উপজেলার পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে সার্ভারে প্রবেশ করতে পারতেন তার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের এনআইডি তৈরি করে দেয়া হতো বলে করিয়ে দিতেন বলে অভিযোগ।

এর মধ্যে কোতোয়ালি থানার ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মো. শাহীন, বন্দর থানার ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মো. জাহিদ এবং ডবলমুরিং থানার ডাটা এন্ট্রি অপারেটর পাভেল বড়ুয়াকেও গ্রেপ্তার করা হয়। এদের মধ্যে শাহীন শাহনূর মিয়ার স্ত্রীর বড় ভাই। গ্রেপ্তার আটজনের মধ্যে শাহনূর, মোস্তফা, শাহীন, জাহিদ, পাভেল এনআইডি প্রকল্পের অধীনে কর্মরত। বাকি দুজন জয়নালের বন্ধু।

এদের মধ্যে আদালতে জয়নাল, মোস্তফা ও শাহনূর জবানবন্দি দিয়েছে। তাতে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা, স্থায়ী ও অস্থায়ী কর্মচারীসহ এনআইডি জালিয়াতিতে অন্তত ৩০ জনের নাম এসেছে বলে তদন্ত কর্মকর্তা জানান।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //