করোনা নিয়ে চীন কি সত্য বলছে?

চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে উৎপত্তি হয় প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের। গত বছরের ডিসেম্বরে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার চীনের বিভিন্ন গবেষক, রাজনীতিবিদরা দাবি করেন, স্থানীয় বন্যপ্রাণী বাজার থেকে ছড়িয়েছে এই করোনা ।

তবে বিশ্বব্যাপী মহামারি রূপে ছড়ানো করোনা ভাইরাস নিয়ে চীনের বিরুদ্ধে মিথ্যা এবং তথ্য লুকানোর অভিযোগ করে আসছে বিভিন্ন দেশ এবং গণমাধ্যম।

সম্প্রতি ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ থেকে সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজকে জানানো হয়েছে, চীন করোনা নিয়ে মিথ্যা বলে থাকতে পারে। চীনের কারণে অন্যান্য দেশকে এমনভাবে ভুগতে হচ্ছে বলেও ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়।

চীনে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কিছুদিনের মধ্যেই খবর আসে, যে ডাক্তার এই ভাইরাস প্রথম শনাক্ত করেছে তাকে শাস্তির আওতায় এনেছিল চীন সরকার। যদিও লি ওয়েনলিয়াং নামের ওই ডাক্তার করোনা আক্রান্ত হয়ে পরে মারা যান।

বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনাভাইরাস শনাক্তের পরই ডাক্তার লি ওয়েনলিয়াংকে চীনের পুলিশ সতর্ক করে দিয়েছিল যাতে এ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দিয়ে আতঙ্ক না তৈরি করা হয়।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজ করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর একাধিক প্রতিবেদনে দাবি করেছে, ভাইরাসটি নিয়ে তথ্য বিভ্রান্তি করছে চীন সরকার।

করোনাভাইরাস যুক্তরাষ্ট্র থেকে তৈরি হয়েছে এমনটিও চীন সরকারের এক মুখপাত্রের কাছ থেকে শোনা গেছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিজিয়ান ঝাও দাবি করেছেন, মার্কিন সেনারা উহানে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে।

এছাড়া চীনের সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসও করোনা ভাইরাসের জন্য ইতালিকে দোষরোপ করার চেষ্টা করেছে।

এদিকে চীন সরকার করোনায় প্রকৃত রোগীর সংখ্যার চেয়ে ৪০ গুণ কম প্রকাশ করেছে বলে কিছু গণমাধ্যম খবর প্রকাশ করেছে।

করোনাভাইরাসের প্রকোপ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মেডিক্যাল সরঞ্জাম পাঠাচ্ছে চীন। যদিও নেদারল্যান্ড, স্পেনের মতো দেশ ওই সব সামগ্রীকে বিপজ্জনক উল্লেখ করে ফেরত দিয়েছে।

ইচ্ছাকৃতভাবে করোনাভাইরাস ছড়ানোর অভিযোগে চীনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে ২০ট্রিলিয়ন ডলারের মামলা করা হয়েছে। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার এমপি জর্জ ক্রিস্টেনসেনও করোনা ভাইরাসের জন্য চীনের কাছে ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, চীন রাষ্ট্রীয়ভাবে করোনাভাইরাসকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করার আগে থেকেই চীনে ফেস মাস্ক বিক্রি বেড়ে যায়।

এছাড়া করোনার খবর বাইরের দেশে জানার আগ থেকেই বিশ্বে ফেস মাস্ক রফতানি বন্ধ করে দেয় চীন। পাশাপাশি বিদেশ থেকেও তখন প্রায় ৫ কোটি ৬০ লাখ ফেস মাস্ক চীন আমদানি করে।

বিশ্বে এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৮ লাখ ৬০ হাজার জন। মারা গেছেন ৪২ হাজার মানুষ।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //