ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০১৯, ১০:৫৮ এএম | আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৯, ০৪:০২ পিএম
তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে তেহরানে বিক্ষোভ। ছবি: বিবিসি
ইরান সরকার হঠাৎ পেট্রলের দাম বৃদ্ধি ও সবার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ পেট্রোল বরাদ্দ করে রেশন ব্যবস্থা কার্যকর করার ঘোষণা দেয়ার পর থেকে দেশটিতে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত সংঘাতে অন্তত দুইজন মারা গেছে।
পেট্রোল থেকে ভর্তুকি উঠিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর গত শুক্রবার পেট্রোলের দাম অন্তত শতকরা ৫০ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে।
কর্তৃপক্ষ বলেছে, তারা দরিদ্রদের জন্য অর্থ বরাদ্দ করার পরিকল্পনা থেকে পেট্রোলের দাম বাড়িয়েছে।
২০১৫ সালে ওয়াশিংটন ইরান পরমাণু চুক্তি থেকে সরে আসার পর যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর নানারকম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পর থেকে অর্থনৈতিকভাবে বেশ ভুগতে হচ্ছে ইরানকে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইরনা জানিয়েছে, শুক্রবার বিক্ষোভকারীরা জ্বালানি মজুদ থাকা একটি গুদামে হামলা চালিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দিতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে একজন মারা যায়। সিরজান শহরের এই ঘটনা বাদেও বেহবাহান শহরে একজন মারা গেছে। এছাড়াও রাজধানী তেহরানসহ কেরমানশাহ, ইসফাহান, তাবরিজ, করদজ, শিরাজ, ইয়াজদ, বোশেহর ও সারি শহরে বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে।
অনেক শহরে ক্ষুব্ধ গাড়ি চালকরা রাস্তার মাঝখানে গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধ করে বা গাড়ি রাস্তায় ফেলে রেখে প্রতিবাদ প্রকাশ করেছেন।
সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট হওয়া ভিডিও থেকে দেখা যায় রাজধানী তেহরানের গাড়িচালকরা ইমাম আলী হাইওয়েতে গাড়ি থামিয়ে পুলিশকে বিক্ষোভে যোগ দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন।
প্রকাশিত কিছু ছবিতে দেখা যায় দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর শিরাজের কয়েকটি পুলিশ স্টেশনে আগুন জ্বলছে। এ নিয়ে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে কৌঁসুলি মোহাম্মদ জাফর মোন্তাজেরি কিছু উচ্ছৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীকে দায়ী করে বলেন, বিক্ষোভকারীদের দেশের বাইরের শক্তির সঙ্গে সম্পৃক্ত।
নতুন আইন অনুযায়ী, প্রত্যেক মোটরযান মালিক ১৫ হাজার রিয়াল প্রতি লিটার দামে (.১৩ ডলার, .১০ পাউন্ড) মাসে ৬০ লিটার পেট্রোল কিনতে পারবেন। এরই নির্ধারিত পরিমাণের পর প্রতি লিটার পেট্রোলের দাম পড়বে ৩০ হাজার রিয়াল। এর আগে একজন ব্যক্তি প্রতি লিটার ১০ হাজার রিয়াল দামে ২৫০ লিটার পর্যন্ত পেট্রোল কিনতে পারতো।
পেট্রোলে ভর্তুকি বাদ দিয়ে যে পরিমাণ নগদ অর্থ আয় করবে সরকার, তা দিয়ে নিম্ন আয়ের দরিদ্র পরিবারকে নগদ অর্থ সহায়তা দেয়া হবে।
ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি শনিবার বলেছেন, ৭৫ শতাংশ ইরানি বর্তমানে 'চাপের মুখে' জীবনধারণ করছেন এবং পেট্রোলের দাম বাড়ানোর সরকার যে অতিরিক্ত আয় করবে তা ইরানের কোষাগারে না গিয়ে ওই জনগণের কাছে পৌঁছাবে।
জ্বালানিতে উচ্চমাত্রায় ভর্তুকি দেয়া এবং মুদ্রার মান হ্রাস পাওয়ার কারণে ইরানে জ্বালানি তেলের দাম খুবই কম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ তেল উৎপাদনকারী দেশ ইরান। প্রতিবছর কয়েক বিলিয়ন ডলারে তেল রপ্তানি করে তারা। কিন্তু তাদের শোধনাগার সুবিধা কম এবং মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে তেলের কারখানার যন্ত্রাংশ আমদানি করাও তাদের জন্য কঠিন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে ছয় দেশের পরমাণু চুক্তি বাতিল করার পর আবারো ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি থেকে সরে আসার পর থেকে ইরান পরমাণু চুক্তির শর্তের বাইরে গিয়ে ধীরে ধীরে তাদের পারমাণবিক কার্যক্রম বৃদ্ধি করছে। তবে পারমাণবিক কার্যক্রম বাড়ালেও নতুন করে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির ইচ্ছা নেই বলে সব সময়ই দাবি করে আসছে তারা।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ফলে ইরানের অর্থনীতিতে বড় ধরনের মন্দা দেখা দেয়, যার ফলে ইরানের মুদ্রার রেকর্ড পরিমাণ দরপতন হয়। এছাড়া বার্ষিক মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে যায় চার গুণ, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ গুটিয়ে নেয়া শুরু করেন এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে বিক্ষোভ দানা বাঁধতে শুরু করে। -বিবিসি
মন্তব্য করুন
ABOUT CONTACT ARCHIVE TERMS POLICY ADVERTISEMENT
প্রধান সম্পাদক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ | প্রকাশক: নাহিদা আকতার জাহেদী
প্রধান সম্পাদক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ
প্রকাশক: নাহিদা আকতার জাহেদী
নির্বাহী সম্পাদক: আরশাদ সিদ্দিকী
নির্বাহী সম্পাদক: আরশাদ সিদ্দিকী | ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭
© 2019 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh